সিলেটের বিপক্ষে সিলেটে মুনিম-সাকিব-ব্রাভোদের ব্যাটে তাণ্ডব
সোমবার সিলেট পর্বের প্রথম দিন ঝড় তুলেছিলেন মুনিম শাহরিয়ার। সঙ্গে ফিফটি হাঁকান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। আজ (সোমবার) স্বাগতিক সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে আরও তেঁতে উঠলেন ফরচুন বরিশালের এ দুই ব্যাটার, দুজনই খেললেন টর্নেডো ইনিংস। পাশাপাশি রানের দেখা পেয়েছেন ক্রিস গেইলও।
লাক্কাতুরায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মুনিম-সাকিবের তান্ডবের পর গেইলের পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংসের সঙ্গে ডোয়াইন ব্রাভোর তান্ডবে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ১৯৯ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে আগেই প্রথম দল হিসেবে প্লে অফ নিশ্চিত করা বরিশাল।
এই ম্যাচটি হারলে আসরের প্রথম দল হিসেবে নিজেদের ঘরের মাঠ থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে সিলেটের। আর তা এড়ানোর জন্য তাদের ছুঁতে হবে ২০০ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য। সিলেটের সামনে এ লক্ষ্য ছুড়ে দেওয়ার পথে মুনিম ২৮ বলে ৫১, সাকিব ১৯ বলে ৩৮, গেইল ৪৫ বলে ৫২* এবং ব্রাভো করেছেন ১৩ বলে ৩৪ রান।
আসরের শুরু থেকেই উদ্বোধনী জুটি নিয়ে ভুগছিল ফরচুন বরিশাল। প্রথম পাঁচ ম্যাচে ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি জুটি ব্যবহার করেও সফল হয়নি সাকিব আল হাসানের দল। অবশেষে তরুণ ডানহাতি মুনিম শাহরিয়ারকে একাদশে সুযোগ দিয়েছে তারা এবং এতেই মিলেছে সফলতা।
মুনিম নিজের প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলেও পরের দুই ম্যাচে দিয়েছেন সামর্থ্যের প্রমাণ। পাওয়ার প্লে কাজে লাগানোর দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস শুরু করতে নেমে গেইলকে আবারও দর্শক বানিয়েছেন মুনিম। ছয় ওভারে বরিশালের সংগ্রহ ছিল ৬৭ রান। যেখানে মুনিমের একার সংগ্রহই ছিল ৪৭ রান, গেইলের ব্যাটে তখন মাত্র ১৪ রান।
পাওয়ার প্লে’র পরের ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের বিপিএল ক্যারিয়ারে প্রথম ও সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন মুনিম। তবে ফিফটি করার পর সেই ওভারেই সোহাগ গাজীর বলে ধরা পড়ে যান লং অন বাউন্ডারিতে। আউট হওয়ার আগে ৬ চার ও ৩ ছয়ের মারে ২৮ বলে ৫১ রান করেন তিনি।
ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশনের কারণে তিন নম্বরে নামানো হয় নুরুল হাসান সোহানকে। কিন্তু হতাশ করেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। নাজমুল অপুর বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪ বলে মাত্র ২ রান করেন তিনি। এরপর উইকেটে এসে শুরুতে খানিকটা সময় নেন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথম ৭ বলে তিনি করেন ৪ রান।
ইনিংসের ১০ ওভার শেষে বরিশালের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৮৫ রান। এরপর থেকে পরের ৭ বল থেকে ২৮ রান করেন সাকিব। গাজীর করা ১১তম ওভারে দুই ছক্কা ও এক চার মারেন তিনি। পরে মোসাদ্দেক এবং আলাউদ্দিন বাবুকেও হাঁকান একটি করে ছক্কা। মনে হচ্ছিল, টানা তৃতীয় ফিফটি তুলে নেবেন সাকিব। কিন্তু ৩৮ রানের মাথায় বাবুর বলে লংঅনে ধরা পড়ে যান তিনি।
সাকিব আউট হওয়ার সময় বরিশালের সংগ্রহ ১২.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১২২ রান। যেখানে গেইলের সংগ্রহ ছিল ২৬ বলে মাত্র ২৩ রান। এরপর তৌহিদ হৃদয়ও আউট হয়ে যান ১১ বলে ১০ রান করে। বরিশালের ইনিংসের শেষটা টানেন দুই ক্যারিবীয় ব্রাভো ও গেইল। এ দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৩.৩ ওভারে ৪২ রান।
ইনিংসের শেষ তিন বলে ব্রাভো হাঁকান যথাক্রমে ৬, ৪ ও ৬; যা বরিশালকে নিয়ে যায় ১৯৯ রানে। ব্রাভো অপরাজিত থেকে যান ১৩ বলে ১ চার ও ৪ ছয়ের মারে ৩৪ রান করে। অন্যদিকে ৪3 বলে ক্যারিয়ারের ৮৮তম ফিফটি হাঁকানো গেইলের ব্যাট থেকে আসে ৪৫ বলে ৫২ রান।
দীর্ঘ ২৮ ইনিংস পর টি-টোয়েন্টিতে ফিফটির দেখা পেয়েছেন গেইল। এর আগে ২০২১ সালের জুলাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫০ পেরিয়েছিলেন দ্য ইউনিভার্স বস। সেদিন ৬৭ রান করেছিলেন তিনি। আজ ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলে অপরাজিত থেকেছেন ৫২ রান করে।