সিনহা হত্যা: অভিযুক্তদের রিমান্ডে না নিয়েই ফিরে গেলো র্যাব
কক্সবাজারের টেকনাফে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে বুধবার (১২ আগস্ট) সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া চার পুলিশ সদস্য ও তিন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হলেও, তাদের না নিয়েই ফিরে গেছে র্যাবের গাড়ি বহর।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) বেলা সোয়া ১১টার দিকে র্যাবের গাড়ি বহরটি কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়।
এ কারণে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ রিমান্ডপ্রাপ্ত ১০ জনই এখনো কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার মোকাম্মেল হক জানান, রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন এবং পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মো. আয়াছকে জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার জন্য র্যাবের একটি দল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগারে আসেন। জেল কর্তৃপক্ষ তাদের র্যাব হেফাজতে দেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে। কিন্তু পরে তাদের (র্যাব) ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশে রিমান্ডপ্রাপ্ত এ সাতজনকে নিয়ে যাওয়া হয়নি।
তবে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, রিমান্ডপ্রাপ্ত সাত আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। যে কোনো সময় নিয়ে যাওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা পর্যায়ক্রমে এগুচ্ছি। এ সাতজনের রিমান্ড শেষে রিমান্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি ওসি প্রদীপ, পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে পরে নিয়ে যাওয়া হবে। ’
এর আগে বুধবার কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ এ সাতজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুনসহ চার পুলিশ সদস্যকে কক্সবাজার জেলা কারাগার ফটকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। একই দিন টেকনাফ বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত হওয়া ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী, বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলেও তাদের এখনো জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেনি র্যাব।
গত ৩১ জুলাই (শুক্রবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৬ আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ সাত আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।