সিটি ভোটেও সোশাল মিডিয়ায় নজরদারির ভাবনা
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এবার ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও দল নিয়ে বিদ্বেষমূলক ও অপপ্রচার ঠেকাতে বিশেষ নজরদারির কথা ভাবা হচ্ছে।
তবে সোশাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানোর বিষয়ে কোনো বিধি-নিষেধ আচরণবিধিতে না থাকায় দ্রুত করণীয় ঠিক করতে কমিশনের নির্দেশনা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
সর্বশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় অপপ্রচার ঠেকাতে প্রশাসনের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনও সোশাল মিডিয়ায় নজরদারি করে।
সে সময় টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করে ইসি সচিবালয়।
তৎকালীন ইসি সচিব সংসদ নির্বাচনের আগে বলেছিলেন, কেউ ভোট নিয়ে প্রপাগান্ডা চালালে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ইসির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংস্থাও দেখবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও অন্যান্য আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপপ্রচার রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির ব্যবস্থা নেওয়া এবং এজন্য বিজ্ঞাপনও প্রচার করা হবে।
ঢাকা সিটি নির্বাচনেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে কমিশন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল ‘ভার্চুয়াল’ সব মাধ্যমে প্রচারণার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুমতি চেয়েছেন । রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত চিঠি দেন তিনি।
তাবিথ বলেন, “ভোটারদের ইচ্ছার প্রতি যথাযথ সম্মান জানিয়ে নির্বাচনী প্রচারনায় বর্তমান সময়োপযোগী ওয়াটসঅ্যাপ, ফেইসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, আইভিআর ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ইচ্ছা পোষণ করছি।
“সমাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।”
নির্বাচনী আইন-বিধিবিধান মেনে এবং সিটি করপোরেশন বিধিমালা অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো ধরনের প্রচারণা না করার নিশ্চয়তাও দেন তাবিথ।
এ বিষয়ে উত্তরের নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসির যুগ্মসচিব আবুল কাসেম জানান, আইনের মধ্যে থেকে প্রচারণা চালাতে হবে। আচরণবিধি লঙ্ঘণ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সোশাল মিডিয়ায় প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিষয় বিদ্যমান আচরণবিধিতে নেই।
“প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে চান বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। কমিশনের কাছে অনুমতি চেয়েছেন, এটা ভালো উদ্যোগ।
“সোশাল মিডিয়ায় প্রচারণার বিষয়টি কমিশনে উপস্থাপন করব। সীমাবদ্ধতা থাকলেও বিদ্বেষমূলক ও আক্রমণাত্মক কোনো বক্তব্য দিলে তা আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে। সোশাল মিডিয়ায় বিষয়টি কীভাবে মনিটরিং করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ তৈরিতে আচরণবিধি প্রয়োগে তৎপর থাকার কথাও জানান এ কর্মকর্তা।
নজরদারির কথা বলেছেন দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসির যুগ্মসচিব আব্দুল বাতেনও।
“সোশাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালাতে বিধি-নিষেধ নেই এখনও। প্রচারের সময় শুরুর পর প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনেই তা করতে হবে। কিন্তু প্রতিদ্বনিদ্ব প্রার্থী, দল বা তাদের সমর্থক কোনো ধরনের বিদ্বেষমূলক, উস্কানিমূলক বা আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়- এমন কিছু করলে তা নজরদারি করা হবে।”
নির্বাহী হাকিম ভোটের মাঠে আচরণবিধি তদারকিতে থাকবে। কোনো অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আব্দুল বাতেন বলেন, “সার্বিকভাবে সোশাল মিডিয়ার বিষয়টি কীভাবে তদারকি করা যায়- তা নিয়ে কমিশনের নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রচলিত আইন-বিধি অনুসরণের পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হতে হবে।”