সাব্বিরের সেঞ্চুরিতে ছড়াল মুগ্ধতা
ক্রীড়া প্রতিবেদক
সাব্বির রহমানকে দলে রাখা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। অধিনায়কের ইচ্ছায় নির্বাচকরা সাড়া দেন। বোর্ড প্রধান পর্যন্ত ভরসা রাখতে পারেন না! নির্বাচকরা নিতে চান না দায়িত্ব! কিন্তু অধিনায়ক বড় পরিকল্পনায় তাকে নেন নিউজিল্যান্ড সফরে।
শেষ পর্যন্ত সেই সাব্বিরই হয়ে উঠলেন নিউজিল্যান্ড সফরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অর্জন। বুধবার ডানেডিনে শেষ ওয়ানডেতে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান পেয়েছেন সেঞ্চুরি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়ার ম্যাচে দল জয় পায়নি ঠিকই, কিন্তু সাব্বির ‘দ্বিতীয় জীবনে’ নিজের আগমনী বার্তা দিয়ে দিলেন ভালোভাবেই।
মাঠের বাইরের বিতর্কে প্রথমে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছয় মাস এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সমান শাস্তি পান সাব্বির। কিন্তু ডিসিপ্লিনারি কমিটি সাব্বিরের শাস্তি পাঁচ মাস কমিয়ে জাতীয় দলের জন্য ‘অ্যাভেইলেভেল’ রাখেন। সেই সুযোগে সাব্বিরকে নিউজিল্যান্ডের বিমানে উঠান মাশরাফি।
নেপিয়ারে প্রথম ম্যাচেই ভালো শুরু করেছিলেন। দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরলেও তার মধ্যে ছিল না জড়তা। যদিও ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি, তবুও ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। পরের ম্যাচে করলেন ৪৩। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দলের বেহাল অবস্থায় হাল ধরলেন। মোহাম্মদ মিথুনকে সঙ্গী করে গড়েন ৭৫ রানের জুটি। মিথুন হাফ সেঞ্চুরি পেলেও সাব্বির পারেন না। আলগা শটে ৪৩ রানে আউট হয়ে আক্ষেপেই পুড়েছিলেন।
কিন্তু চার দিনের ব্যবধানে সব পাওয়া হয়ে গেছে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। বুধবার বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ৩৩১। মুশফিকুর রহিমের আউটে সাব্বির রহমান যখন ক্রিজে আসেন, তখন দলের রান ৪ উইকেটে ৪০। মাহমুদউলাহ রিয়াদ বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। ৬১ রানে নেই ৫ উইকেট।
ষষ্ঠ উইকেটে সাব্বিরের পথচলা শুরু মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে নিয়ে। দুজন ১০১ রানের জুটি গড়েন। সাব্বির তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। সাইফউদ্দিনও এগিয়ে যান। কিন্তু বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাট থমকে যায় চলিশের ঘরে। অষ্টম উইকেটে মিরাজকে নিয়ে ৬৭ রানের জুটি গড়ার পথে সাব্বির পেয়ে যান সেঞ্চুরি।
মিরাজ যেন আসলেই ‘লাকি চার্ম’। টেস্টে মুশফিকের ঘরের মাঠে ডাবল সেঞ্চুরি, মাহমুদউলাহর আট বছর পর টেস্ট সেঞ্চুরি, সাব্বিরের আজকের একশ। সব কিছুতেই মিরাজ যেন ছায়ার মতো মিশে থাকেন।