সাংসদদের শপথের বৈধতা প্রশ্নে রিট আবারও খারিজ
দক্ষিণাঞ্চল ডেক্স
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জয়ীদের শপথ অবৈধ দাবি করে ২৯০ জনের সাংসদ পদে থাকার বৈধতা প্রশ্নে দায়ের করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। এমপিদের শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এম মাহবুবউদ্দিন খোকন ও সাকিব মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটির্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান। দশম সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় একাদশ সংসদের এমপিদের শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ১৭ জানুয়ারি আবেদনটি ‘উত্থাপিত হয়নি’ বলে খারিজ করে দিয়েছিল। পরে ফের রিট আবেদনটি করা হলে গত ৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি নিয়ে আদালত ১৮ ফেব্রুয়ারি আদেশের দিন রেখেছিল।
আদেশের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান বলেন, “একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা দায়িত্ব নেবেন বলেই গত ৩ জানুয়ারি তারা শপথ নিয়েছেন। সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছে ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশন বসার দিন থেকে সংসদ সদস্যরা কার্যভার গ্রহণ করে থাকেন। ফলে আগে শপথ নিলেও তাতে সংবিধান বা আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি। ফলে রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।’’
“আদালত বলেছে, ‘সংসদ অধিবেশন শুরু আগে শপথ নেওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকার গঠন। কারণ রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া দলের প্রধানকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকেন। এ কারণে নির্বাচিত সদস্যরা আগে শপথ নিয়েছেন। আর সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে সরকার গঠন করা হয়ে থাকে। অতএব রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করা হল’।”
অন্যদিকে আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যাওয়ার কথা বলেছেন রিটকারীর আইনজীবী বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন।
তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, শপথ গ্রহণের দিন থেকেই সংসদ সদস্যদের কার্যভার গ্রহণ করা হয়। কিন্তু আদালত সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে সংসদ সদস্যদের কার্যভার গ্রহণ করার কথা বলেছেন। আদালতের এই পর্যবেক্ষণ যথাযথ মনে করছি না। তাই এ আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আপিল বিভাগে যাব।”
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ৯ জানুয়ারি শপথ নিয়েছিলেন। বিএনপিবিহীন ওই সংসদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি। সে অনুযায়ী এ বছরের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত দশম সংসদের মেয়াদ ছিল।
মেয়াদ অবসানের ৯০ দিন আগে থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করে গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন হয়। নির্বাচনে বিজয়ীরা গত ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। এরপর ৭ জানুয়ারি নতুন সরকারও শপথ নেয়।
তার একদিন বাদে গত ৮ জানুয়ারি নতুন এমপিদের শপথ বাতিল করে গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়ে স্পিকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে উকিল নোটিস দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ। তার আইনজীবী হিসেবে মাহবুবউদ্দিন খোকন ওই নোটিস পাঠান।
ওই নোটিসের জবাব না পাওয়ায় নতুন সাংসদদের শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ জানুয়ারি রিট আবেদন করেন তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ।