সাংবাদিক কাজলকে পাওয়া গেল বেনাপোল সীমান্তে
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হওয়ার পর প্রায় দুই মাস ধরে নিখোঁজ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের খোঁজ মিলেছে বেনাপোল সীমান্তে
বেনাপোল বন্দর থানার ওসি মামুন খান জানান, শনিবার গভীর রাতে বিজিবি রঘুনাথপুর সীমান্ত থেকে এ ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
“পরে জানা যায়, ওই ব্যক্তি ঢাকা থেকে নিখোঁজ ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। বিজিবি অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে থানায় একটি মামলা করেছে। আমরা তাকে আজ কোর্টে পাঠাব।”
এদিকে কাজলের স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী জানান, শনিবার রাত পৌনে ৩টার দিকে বেনাপোল থানা থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ফোন করে তাকে স্বামীর সঙ্গে তাদের কথা বলিয়ে দেন।
“আমার ছেলেকে ও ফোনে বলেছে, ‘আব্বু আমি বেঁচে আছি, তোমরা সবাই আমাকে নিতে আস’।”
তাদের ছেলে মনোরম পলক সকালে আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলে জানান জুলিয়া।
কাজলের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মামুন খান বলেন, “তাকে আমরা এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করিনি। এটা বিজিবি বলতে পারবে।”
যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যটালিয়নের রঘুনাথপুর ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার আশেক আলী বলেন, “বেনাপোলের সাদিপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে প্রবেশের সময় ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাকে আটক দেখিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িত’দের নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কারণে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, তাতে আসামির তালিকায় কাজলের নামও রয়েছে।
মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর গত ৯ মার্চ শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই মামলা দায়ের করেন।
মামলা হওয়ার পর গত ১০ মার্চ থেকে কাজলের খোঁজ মিলছে না জানিয়ে প্রথমে চকবাজার থানায় জিডি ও পরে মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক।
এক সময়ের জাসদ ছাত্রলীগ নেতা কাজল নিখোঁজ হওয়ার পর তার সন্ধান দাবিতে পুরনো রাজনৈতিক সহকর্মী, স্বজন ও সাংবাদিকরা মাঠে নেমেছিলেন।
তাদের আন্দোলনের মধ্যে এক পর্যায়ে কাজলের একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ভিডিওতে কাজল নিখোঁজ হওয়ার কিছুক্ষণ আগের চিত্র উঠে এসেছে বলে দাবি সংস্থাটির।
ওই ফুটেজে কাজলকে একটি জায়গায় রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল রেখে পাশের কোথাও যেতে দেখা যায়। বেশ কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান তিনি। এর মধ্যে তার ওই মোটরসাইকেল ঘিরে কয়েকজনকে তৎপরতা চালাতে দেখা যায়।
তবে ওই ফুটেজ ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে তেমন কিছু মেলেনি বলে জানিয়েছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।