December 21, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
সোমবার ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। প্রশ্নগুলি সীমান্ত হত্যা, তিস্তা চুক্তি, নতুন এনআরসি এবং সিএএ আইন এবং ভারতীয় ভিসা সম্পর্কিত ছিল। সাংবাদিকরা সীমান্তে অহরহ বিএসএফ গুলিয়ে চালিয়ে নিরীহ সাধারন মানুষ হত্যার বিষয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট সচিব শ্রিংলা বলেন, “বাংলাদেশ ও আমাদের মধ্যকার ৪১০০ কিঃ মিঃ সীমান্ত এলাকা একটি জটিল সীমান্ত কারণ এটি জনবহুল এলাকা ছাড়াও বন, নদী এবং মাঠের মধ্য দিয়েও গেছে। দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ কার্যকলাপের সুযোগ তৈরী হয়েছে। এর মধ্যে যেমন মাদক ও গবাদি পশু চোরাচালান রয়েছে, তেমনি রয়েছে শুল্ক এবং সাধারণ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের আওতায় থাকা পণ্য চোরাচালানও। দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যকার নীতি হচ্ছে সীমান্তে অপরাধমূলক কর্মকান্ড রোধ করার পাশাপাশি সীমান্তে শান্তি ও বন্ধুত্বপূর্ণ স্থিতি বজায় রাখার জন্য একটা আন্তরিক ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক চর্চা করা। যদিও সীমান্তরক্ষী বাহিনী কখনোই অপরাধ দমনের জন্য সু-সম্পর্কের উপর নির্ভর করতে পারে না, কারণ মানুষ সেখানে অপরাধ প্রবণ। গত দুই বছরে সহিংস ঘটনা বেড়েছে কারণ আমাদের সীমান্ত বাহিনীর ক্ষমতা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যা চোরাচালানকারী এবং তাদের সহযোগীদের মরিয়া করে তুলেছে। যার মানে হল বিএসএফ এর কিছু টহল দল দু’দেশের পাচারকারীদের সহিংস আক্রমণের স্বীকার হয়ে আসছে। সরকারের নির্দেশের প্রেক্ষিতে, বিএসএফ একটি নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে যেটি হলো শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করা। সতর্ক করা, ফাঁকা গুলি করার মতো অন্যান্য প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপগুলো দ্বারা তাদের উপর আক্রমণকারী চোরাকারবারীদেরকে বিরত করতে ব্যর্থ হলে তখনই শুধু বিএসএফ সদস্যরা তাদের জীবন বাঁচাতে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়। যদিও এটি সত্য যে প্রতিটি মৃত্যুই অত্যন্ত দুঃখজনক, কিন্তু আমরা আমাদের নিরাপত্তা কর্মীদের তাদের নিজের জীবন বাঁচাতে না বলতে পারি না। এছাড়া, পরিসংখ্যানে স্পষ্ট যে, সহিংসতার প্রায় সমস্ত ঘটনা সীমান্তের ভারতীয় অংশের মধ্যেই সংঘটিত হচ্ছে এবং আহত বা নিহতদের তালিকায় ভারতীয় এবং বাংলাদেশী নাগরিকের সংখ্যা প্রায় সমান। যেটা প্রমাণ করে যে, দুই দেশের নাগরিকরাই বিএসএফ এর উপর আক্রমণে জড়িত এবং বিএসএফ কেবল চোরাকারবারীদের আক্রমণের জবাব দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, গত তিন বছরে, চোরাচালানকারীদের আক্রমণের অনেক বিএসএফ সদস্য মারাত্মক আহতসহ হতাহতের শিকার হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৯ সালে ১২ জন ভারতীয় নাগরিক মারা গিয়েছিলেন, চারজন আহত হয়েছিল। একই বছর বিএসএফের ৮৩ জন আহত এবং একজন নিহত হয়েছিল। এর যে সমাধানটি আমরা বারবার বলেছি, তা হল অবশিষ্ট ১৬৫ কিলোমিটার সীমান্তে আধুনিক কাট-প্রুফ বেড়া দেয়ার কাজ সম্পন্ন করা যা আমাদের সুরক্ষার উন্নতি করবে। একই সাথে সীমান্ত হাটগুলির দ্রুত সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পণ্যের আন্ত সীমান্ত বাণিজ্য উন্নয়নের প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করতে হবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *