সরাসরি ট্যাপের পানি পানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা
রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছেই। বড়দের চেয়ে ছোটরা এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা শিশু হাসপাতালে বেড়েছে ডায়ারিয়া আক্রান্ত রোগী।
অভিভাবক ও চিকিৎসকরা বলছেন, সরাসরি ট্যাপ থেকে ওয়াসার পানি পান, ভ্যাপসা গরম ও খাদ্যে অসচেতনতার কারণে শিশুরা বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়রিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের বেশিরভাগই মিরপুর, গাবতলী, আগারগাঁও, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর এলাকার।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দেড় মাসে ভর্তি রোগীর সংখ্যা তার আগের একই সময়ে চেয়ে অনেক বেশি। গেলো এক সপ্তাহে এ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২০২ জন রোগী। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সর্বোচ্চ ৪০ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়। এছাড়া গত ৮ এপ্রিল ২১ শিশু, ৯ এপ্রিল ৩৬, ১০ এপ্রিল ১৯, ১১ এপ্রিল ১৯, ১২ এপ্রিল ২৩, ১৩ এপ্রিল ২৯, ১৪ এপ্রিল ৪০ এবং সর্বশেষ ১৫ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত ১৫ শিশুকে ডায়রিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এক বছর ১১ মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন গাবতলীর হাজেরা বেগম। তিনি বলেন, ‘গত চারদিন ধরে বাচ্চাকে এখানে ভর্তি করেছি। ওর চিকিৎসা চলছে। তবে কীভাবে ডায়রিয়া হলো, তা বুঝতে পারছি না। আমরা পানি ফুটিয়ে খাই। তবে মাঝে-মধ্যে সরাসরি কলের পানিও খাওয়া হয়।’
মিরপুর থেকে আরেকজন এসেছেন দেড় বছর বয়সী শিশু নিয়ে। এক সপ্তাহ ধরে সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে তিনি। কীভাবে ডায়রিয়া হয়েছে জানাতে না পারলেও বাসা পরিবর্তনের পর হঠাৎ এমন সমস্যা দেখা দেয় বলে জানান ওই অভিভাবক।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত আবাসিক চিকিৎসক ডা. নাদিরা খান বলেন, ‘যারা ডায়রিয়ার সমস্যা নিয়ে আসছে, তাদের বয়স ছয় মাস থেকে আড়াই বছরের মধ্যে। হাসপাতালে আসার পর আমরা উপসর্গগুলো দেখে প্রাথমিকভাবে কিছু পরীক্ষা করি। এরপর চার ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। যদি সমস্যা গুরুতর মনে হয়, তবে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।’
ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খাবারে অনিয়মের কারণে এমনটা বেশি হচ্ছে। রোজায় সব বাসায় ভাজাপোড়া ও তেলযুক্ত খাবারের আয়োজন বেশি হয়। ফলে খাদ্যে অসচেতনতা একটি বড় সমস্যা। তবে গত এক মাস হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের খাওয়ার পানি থেকে বেশি সমস্যা হয়েছে। অনেকে সরাসরি কলের পানি পান করছে। সেসব শিশুরা ডায়রিয়াজনিত সমস্যা ভুগছে বেশি।