January 22, 2025
আঞ্চলিক

সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত: সুন্দরবনে প্রজনন মৌসুমে চলছে কাঁকড়া নিধন

কয়রা প্রতিনিধি

সুন্দরবনে প্রজনন মৌসুমে চলছে কাঁকড়া নিধন। সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন শত শত মন মা কাঁকড়া আহরণ করা হলেও ঘুমিয়ে আছে বনবিভাগ। তারা দেখেও  না দেখার ভান করে আছেন। বর্তমানে  বাজারে ডিমওয়ালা মা কাঁকড়ার চাহিদা ও দাম বেশী থাকায় নিষেধাজ্ঞা মানছে না কাঁকড়া আহরনকারী ও ব্যবসায়ীরা। সরকারের বেধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী জানুয়ারী-ফেব্রয়ারী মাস প্রজনন মৌসুম পর্যন্ত কাঁকড়া ধরা সরকারী ভাবে নিষেধ থাকলেও তা উপেক্ষা করে জেলেরা অবাধে কাঁকড়া নিধোনে মেতে উঠেছে।

জানা গেছে, কাঁকড়ার প্রধান প্রজনন ক্ষেত্র হলো বিশ্বের প্রধানতম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন। দেশের উপকূলীয় এলাকা সুন্দরবন থেকে আহরিত কাঁকড়া বিশ্বেরে বিভিন্ন দেশে  রপ্তানী হয়ে থাকে। যা থেকে সরকার প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব উপার্জন করে। কাঁকড়া প্রজনন মৌসুম জানুয়ারী-ফেব্রয়ারী দুই মাস তারা ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে লোনা পানিতে ডিম ছাড়ে। যে কারণে ওই দুই মাস কাঁকড়া নিধনের উপর সরকারী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কাঁকড়া নিধনে মেতে উঠেছে কাঁকড়া শিকারীরা। নিরাপত্তার জন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরনকারী জেলেরা জানান, সরকারীভাবে কাঁকড়া ধরা নিষেধ থাকায় বন বিভাগের সাথে গোপন চুক্তি করে মাছ শিকারের পাস নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে কাঁকড়া শিকার করছে। বন বিভাগ ও স্মাট টিম কে ম্যানেজ করার জন্য প্রতি সপ্তাহে নৌকা প্রতি মোটা অংকের টাকা দিতে হয় তাদের মনোনিত এক নেতার কাছে তার দায়িত্ব হলো কখন বন বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও স্মাট টিম সুন্দরবনে প্রবেশ করে তা জেলেদের জানিয়ে দেয়া। বর্তমানে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার জন্য শত শত নৌকা নিয়োজিত রয়েছে।

স্থানীয় কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা জানান, প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা কাঁকড়ার চাহিদা ও দাম অন্য বছরের চেয়ে অনেক বেশী থাকায় শিকারীরা যে কোন উপায়ে কাঁকড়া নিধন করছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে এক কেজি পি এফ-১ কাঁকড়ার মুল্য ১২-থেকে ১৩ শত টাকা। তবে  দাম আরও বাড়তে পারে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার এস এম আলাউদ্দিন আহমেদ জানান, জানুয়ারী-ফেব্রয়ারী মাস কাঁকড়া প্রজনন মৌসুম এ সময় ডিমওয়ালা কাঁকড়ার দাম বেশী হওয়ায় আহরনকারীরা সরকারের বেধে দেওয়া নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে কাঁকড়া নিধন করছে। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে।

সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের খুলনা রেঞ্জের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট ষ্টেশনের কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ আল বাহারাম জানান, এ ব্যাপারে তিনি সতর্ক আছেন যাতে অবৈধ ভাবে প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনে প্রবেশ করে কেউ কাঁকড়া নিধন করতে না পারে। খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ বশিরুল আল মামুন জানান, প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়া ধরা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ। যদি কাঁকড়া ধরার সাথে বনবিভাগের কোন ব্যক্তি জড়িত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *