November 25, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

সব বিমানবন্দরে ডগ স্কোয়াড গঠনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

অধিকতর নিরাপত্তার জন্য সব বিমানবন্দরে ডগ স্কোয়াড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদনের সময় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

এ দিন শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ৮ হাজার ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি অর্থ (জিওবি) প্রায় ৩ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫৫১ কোটি টাকা ও প্রকল্প ঋণ ৪ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। একনেক সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুকুরের ঘ্রাণশক্তি অত্যন্ত প্রখর। পৃথিবীর অনেক দেশের বিমানবন্দরেই ডগ স্কোয়াড থাকে। বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তার জন্যেও ডগ স্কোয়াড গঠন করতে হবে।

সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে তিনটি আন্তর্জাতিক ও ছয়টি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে। দেশের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বিমানবন্দরগুলোর ব্যস্ততাও দিন দিন বাড়ছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় এসব বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। কমিউনিকেশন ও নেভিগেশন সার্ভেইল্যান্স (সিএনএস) ব্যবস্থা উড়োজাহাজ পরিচালনা ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কাজে বাংলাদেশে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশগুলোর বেশিরভাগই পুরনো, অনেক সময় এসব ঠিকঠাক কাজ করে না। গৃহীত প্রকল্পের আওতায় এ কাজের জন্য নতুন যন্ত্রপাতি কেনা হবে।

‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এ অর্থ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হবে।

একনেক সভায় জানানো হয়, আকাশপথে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে বিমান চলাচলের লক্ষ্যে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজিওন (এফআইআর) কাভারের সার্ভেইল্যান্স গভীর সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত করার জন্য শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে প্রকল্প এলাকা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। যশোর ও সৈয়দপুরে দু’টি কনভেনশনাল ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি ওমনিডিরেকশনাল রেঞ্জ (সিভিওআর) রয়েছে, যা ২৫ বছরের পুরনো। এখানে ডপলার ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি ওমনিডিরেকশনাল রেডিও রেঞ্জ (ডিভিওআর) প্রতিস্থাপন ও ডিসট্যান্স মেজারিং ইক্যুইপমেন্ট (ডিএমই) স্থাপন করা হবে। এছাড়া, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) প্রতিস্থাপন করা হবে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রাইমারি সার্ভেইল্যান্স রাডার (পিএসআর) ও সেকেন্ডারি সার্ভেইল্যান্স রাডার (এসএসআর)  নেই। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এসএসআর ৩০ বছরের পুরনো। এ যন্ত্রটি দিয়েই বাংলাদেশের সব এফআইআর কাভার করা হচ্ছে। তাই, যত দ্রুত সম্ভব, এসব বিমানবন্দরে এএসআর ও পিএসআর প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। এছাড়া, যশোর ও সৈয়দপুরে সিভিওআর ও ডিভিওআর ২৫ বছরের পুরনো। এগুলোও প্রতিস্থাপন করা জরুরি।

গৃহীত প্রকল্পের আওতায় এসব যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন করে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপদ উড়োজাহাজ পরিচালনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়। একনেক সভায় ৭১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘নেত্রকোণা-কেন্দুয়া-আঠারবাড়ী-ঈশ্বরগঞ্জ জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশের মহাসড়কগুলোর জন্য একটি মহাপরিকল্পনা নেওয়া হবে।

সভায় জানানো হয়, মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হবে। চালকেরা যাত্রাপথে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার সুবিধা পাবেন এখানে। এতে চালকদের জন্য গোসল, ঘুম, চালক পরিবর্তন ও যানবাহনের বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্র“টি সারানোর ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, সব বিশ্রামাগারেই পর্যাপ্ত পার্কিং সুবিধা, বিনোদনের জন্য টেলিভিশন, বাথরুম, চা-কফিসহ খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। এতে, চালকদের ভ্রমণজনিত ক্লান্তি ও অবসাদ দূর হবে। ফলে, বেপরোয়া ড্রাইভিংয়ের কারণে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনা কমবে ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।

সভায় ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু পৌরসভা নয়, ইউনিয়ন পরিষদও যেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যেতে পারে, সে জন্য মহাপরিকল্পনা নিতে হবে। দারিদ্র্যসীমা থেকে কোন কোন জেলা বের হয়ে আসলো, তার একটা ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে।

এদিন, ১০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘প্রাণিসম্পদ উৎপাদন, উপকরণ ও প্রাণিজাত খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন’ প্রকল্পেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসময় শেখ হাসিনা বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মাংস নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কসাইখানাগুলোকে মানসম্মত ও আধুনিক করতে হবে।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *