সবাই না চাইলে ইভিএমের ব্যবহার হবে না : সিইসি
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
এর আগে বিভিন্ন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবহার করে ‘সুফল’ পাওয়ার কারণেই নির্বাচন কমিশন ইভিএম ‘ধরে রেখেছে’ বলে মন্তব্য করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তবে যন্ত্রে ভোটগ্রহণ নিয়ে এখনও দেশে যে অনেকের আপত্তি আছে, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, অনেক প্রতিক‚লতার মধ্যেই ইভিএমে টিকে আছি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনিস্টিউটে ঢাকার দুই সিটি করাপেরশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিয়ে দুই দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসির এমন বক্তব্য আসে।
কমিশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা অনেকে ইভিএমে নির্বাচন করেছেন। ইভিএমে নির্বাচন পরিচালনায় কোনো অসুবিধা নাই। এর মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ সফলভাবে করা যায়।
সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে কয়েকটি আসনসহ বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথা তলে ধরে সিইসি বলেন, আমরা সুফল পেয়েছি, তাই ধরে রেখেছি।
নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আসা বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে বরাবরই আপত্তি জানিয়ে আসছে। তাদের ধারণা, যন্ত্রে ভোটগ্রহণ হলে ‘ম্যানিপুলেট’ করার এবং ফলাফল ‘নিয়ন্ত্রণ’ করার সুযোগ থেকে যাবে।
আগামী ৩০ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এ নির্বাচনে সবকেন্দ্রেই ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে, যা নিয়ে নিজেদের সংশয়ের কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সে দিকে ইংগিত করে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ইভিএম নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে অনেক দ্বিধা-দ্ব›দ্ব আছে। ইভিএম প্রশ্নবিদ্ধ হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
সিইসি তখন বলেন, যদি সবাই বলেন, ইভিএম দিয়ে ভালোভাবে নির্বাচন করা যায় না, তাহলে আমরা ইভিএম ব্যবহার করব না।
নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, গ্রহণযোগ্য ও আইনানুগ নির্বাচন চায় ইসি। অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
অপর নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদত হোসেন চৌধুরী বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ মসৃণ করতে প্রতি কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর দুজন করে টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেওয়া হবে। কর্মকর্তাদের উপর নির্ভর করে কমিশনের ভাবমূর্তি। প্রার্থীরা যেন লেভেল প্লেইং ফিল্ড পায়. সেভাবে কাজ করতে হবে। নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন চায় ইসি।
নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ইসি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম। আস্থার জায়গাটা দৃঢ় করতে চায় ইসি। এটি সক্ষমতার পরীক্ষা। নির্বাচন যেন প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকে, নির্বাচন নিয়ে যেন কোন প্রশ্ন না ওঠে, সেজন্য ইভিএমে ভোট হবে। ইভিএম নিয়ে যেন প্রশ্ন না ওঠে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনাগ্রহের জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীরও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।