সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একযোগে পদক্ষেপ গ্রহণে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি হাসিনা-ট্রুডোর আহবান
(বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সন্ত্রাস উচ্ছেদে একযোগে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। আজ সকালে দু’নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত টেলিফোন আলাপে তাঁরা এই আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বাসসকে বলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচাচের্র মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
প্রায় ২০ মিনিট তাঁদের মধ্যে কথোপকথন অনুষ্ঠিত হওয়ার তথ্য উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ট্রুডো তাঁর ফোনকলে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কেননা শুক্রবারের সেই নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অল্পের জন্য রক্ষা পায়। যে হামলায় ৪ জন বাংলাদেশীসহ ৫০ জন নিহত এবং বহু আহত হয়।
‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যদের রক্ষা পাওয়ার ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করেন’, বলেন প্রেস সচিব।
জাস্টিন ট্রুডো নিউজিল্যান্ডের দু’টি মসজিদে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশীসহ ৫০ ব্যক্তি নিহত হওয়ায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।
প্রেস সচিব বলেন, জাস্টিন ট্রুডোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এজন্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত।
এর উত্তরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অভিমত সমর্থন করেন এবং বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসের মূল উৎপাদনে একযোগে কাজ করতে হবে।’
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সকল ক্ষেত্রেই সন্ত্রাসকে নিন্দা জানায়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি শান্তি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এবং আমরা আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীকে সকল তীর্থ স্থান যেমন-মসজিদ, মন্দির, গীর্জা এবং প্যাগোডা রক্ষার জন্য সতর্ক করে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ইসলামে কোনভাবে এবং কোন ধরনেরই সন্ত্রাসের কোন সুযোগ নেই এবং সন্ত্রাসীর কোন ধর্ম নেই এবং ভৌগণিক সীমারেখা নেই।
প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে বলেন যে, বাংলাদেশ সরকার সমাজ থেকে সন্ত্রাসের মূল উৎপাটনের মাধ্যমে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানে সকলকে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় কানাডায় অবস্থানরত জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনী নূর চৌধূরীকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাঁর আহবান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘নূর চৌধুরী বর্তমানে ন্যায় বিচার থেকে পলাতক থেকে কানাডায় অবস্থান করছে। এটি আইনের শাসনের ক্ষেত্রে একটি বড় কাজ হবে, যদি কানাডা বঙ্গবন্ধুর খুনীকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়, যাতে করে সে ন্যায় বিচারের সম্মুখীন হতে পারে।’
এর উত্তরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা একটি আইনি বিষয় এবং আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবো।’
শেখ হাসিনা এসময় দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডা ভবিষ্যতে আরো উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় পারস্পরিক সহযোগিতা, হৃদ্যতা এবং সম্মানজনক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং কানাডার আসন্ন নির্বাচনে তাঁর সাফল্য কামনা করেন।
জাষ্টিন ট্রুডো এসময় বিগত নির্বাচনে তাঁর বিপুল বিজয়ে এবং চতুর্থ বারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণে শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।