‘সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্র’, হংকংয়ে ৬ স্কুল ছাত্রসহ গ্রেপ্তার ৯
হংকংয়ের বিভিন্ন এলাকা ও স্থাপনায় সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করা একটি চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চীন নিয়ন্ত্রিত শহরটির পুলিশ।গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মাধ্যমিক স্কুলের ৬ শিক্ষার্থীও আছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এই ষড়যন্ত্রকারীরা টানেল, আদালত ভবন, যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও সড়কে হামলার পরিকল্পনা করছিল; বোমা বানানোর লক্ষ্যে তারা একটি হোটেল কক্ষও ভাড়া নিয়েছিল।
গ্রেপ্তার ৯ জনের বয়স ১৫ থেকে ৩৯ এর মধ্যে বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম শহরজুড়ে ‘বেআইনি চিন্তাভাবনা’ ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করার পরপরই এ সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়।
৯ সন্দেহভাজনকে বিতর্কিত ‘জাতীয় নিরাপত্তা আইনে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কয়েক বছর ধরে চীন নিয়ন্ত্রিত শহরটিতে গণতন্ত্রপন্থিদের প্রতিবাদ কর্মসূচিগুলোতে তরুণদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখার পর মূলত ভিন্নমত দমনের উদ্দেশ্যেই এ আইনটি করা হয়েছে বলে ধারণা পশ্চিমা বিশ্লেষকদের।
হংকংয়ের পুলিশ জানিয়েছে, তারা একটি হোটেল কক্ষ থেকে ট্রাইসেটন ট্রাইপারঅক্সাইড (টিএটিপি) উদ্ধার করেছে, এ রাসায়নিক শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটানোর ক্ষমতা রাখে।
ওই হোটেল কক্ষটি বোমা বানানোর ল্যাবরেটরি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, বলেছে পুলিশ।
তারা গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ৭৭ হাজার ডলারও জব্দ করেছে।
“গ্রেপ্তারকৃতরা ক্রস-হারবার টানেল, রেলওয়ে, আদালত কক্ষসহ হংকংয়ের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছিল; তারা এমনকী সড়কের আবর্জনা রাখার বিনেও বোমা পেঁতে রাখতে চেয়েছিল, যেন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক করা যায়,” সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন পুলিশের জ্যেষ্ঠ সুপারিনটেন্ডেন্ট লি কোয়াই-ওয়াহ।
এই ৯ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানানোর কিছুক্ষণ আগেই হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী লাম কিশোর বয়সীদের ওপর নজর রাখতে এবং সন্দেহজনক কোনো তৎপরতা চোখে পড়লে তা জানাতে অভিভাবক, শিক্ষক ও ধর্মীয় নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে লাম হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ায় বেইজিংয়ের প্রশংসা এবং ১ জুলাই আত্মঘাতী হওয়া এক ব্যক্তির জন্য শোক জানানো ব্যক্তিদের সমালোচনাও করেন।
আত্মঘাতী হওয়ার আগে ওই ব্যক্তি এক পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করেছিল।
ব্রিটিশ শাসন থেকে হংকংয়ের চীনের হাতে আসার বর্ষপূর্তি এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শতবর্ষ পূর্তির দিনে এ ঘটনা ঘটে।
অতীতে এ দিনটিতে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থিরা শহরটির ওপর চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তারে ক্ষোভ জানিয়ে বিক্ষোভ করলেও এ বছর এ ধরনের কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়ে যেত; এ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।