সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি করে শত কোটি টাকার সম্পদ খুলনার বাদল দম্পতির
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি করে শত কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। খুলনার খালিশপুর থেকে গ্রেফতার এই দম্পতি হচ্ছেন এইচ এম এ বারিক ওরফে বাদল ওরফে বাদল হাওলাদার ওরফে মোস্তাক আহমেদ এবং তার স্ত্রী মুরশিদা আফরীন। গত ৭ জানুয়ারি তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।
গতকাল শনিবার তিনি জানান, ২১ সদস্যের এই চক্রটি ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। চক্রটি জাল সঞ্চয়পত্র দিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার সহায়তায় বিভিন্ন নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করত বলে জানায় সিআইডি।
এসব জালিয়াতির বিষয়ে জানার পর দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৪ সালে, ২০১১ সালে এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা পশ্চিম ও মোহাম্মদপুর থানায় বারিক এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মোট ৭টি মামলা করে। সিআইডি কর্মকর্তা ফারুক বলেন, সিআইডি এসব মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর একটি বড় চক্রের সন্ধান পায়।
খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায়, সংঘবদ্ধ চক্রের ২১ সদস্য দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর কয়েকটি ব্যাংকে একই ব্যক্তির একাধিক নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে বিভিন্ন নাম-সর্বস্ব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে একাউন্ট খুলত। সেই একউন্টের বিপরীতে ভুয়া সঞ্চয়পত্র, এফডিআর জমা দিয়ে স্বনামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছিল।
বারিক দম্পতি চক্রের অন্যতম দুই সদস্য জানিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা ফারুক বলেন, তাদের গ্রেফতার অভিযানে নেমে জানা যায় তারা ভারত এবং মালয়েশিয়ায় আত্মগোপন করে আছেন। এছাড়া আসিরুল হক নামে এবি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত।
২০০৪ সালে দুদকের মামলা দায়েরের পরপরই আসিরুল হক গ্রেফতার হন। পরে জামিনে বের হওয়ার পর ২০০৬ সালে তিনি মারা যান। বারিক দম্পতির বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আবারও চক্রটি সক্রিয় হওয়ার খবর পেয়ে সিআইডি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে বলে জানান ফারুক।
তিনি বলেন, সিআইডি অনুসন্ধানকালে এই দম্পতির নামে বর্তমানে ব্যাংক একাউন্টে প্রায় ২ কোটি টাকা ছাড়াও গুলশান ২ নম্বরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের ১টি ৯তলা বাড়ি, উত্তরায় শত কোটি টাকা মূল্যের ১টি ৬ তলা বাড়ি, উত্তরখান এলাকায় কোটি টাকা মূল্যের একটি দুই তলা বাড়ি, একাধিক ফ্ল্যাট, গাড়ি ও জমির সন্ধান পেয়েছে। বারিক একটি মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি বলেও সিআইডি জানায়।
ফারুক বলেন, প্রতিষ্ঠিত একাধিক ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছে এই চক্রে। ইতোমধ্যে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করা হবে।