সংকট নিরসনে চুক্তির দ্বারপ্রান্তে সৌদি-কাতার
হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার আগেই বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যে প্রাথমিক চুক্তি হতে পারে বলে সূত্রের বরাতে জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাওয়ার কয়েকদিনের মাথায় তিন বছর ধরে সৌদি আরবের নেতৃত্বে চলা ‘কাতার অবরোধ’ শেষ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
বিদায় নেয়ার আগে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট মেটাতে নেয়া নীতির আরও একটা বড় সাফল্য পেতে চান ট্রাম্প। তাই আগামী ২০ জানুয়ারির আগে যাতে কাতার-সৌদির চুক্তি হয়ে যায়, তার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে তার প্রশাসন।
মধ্যপ্রাচ্য সফররত কুশনার গত সপ্তাহে সৌদির রাজধানী রিয়াদে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করেন। গত বুধবার তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিল হামাদ আল থানির সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল মার্কিন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলছে, ‘আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল বিরোধ মেটানো এবং কাতারের বিমান যাতে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপর দিয়ে যেতে পারে, তার ব্যবস্থা করা।’
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, প্রাথমিক চুক্তি শুধু সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যে হবে। আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর তাতে থাকবে না। হয়তো ধীরে ধীরে এই তিন দেশের সঙ্গেও চুক্তি হবে কাতারের।
২০১৭ সালে সৌদি আরবের নেতৃত্বে এই চার দেশ কাতারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশটির সঙ্গে সব রকম কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে জল, স্থল আকাশপথ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
চার দেশের অভিযোগ ছিল, কাতার সন্ত্রাসবাদকে মদত দিচ্ছে এবং ইরানের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে। কাতার অবশ্য এই সব অভিযোগ খারিজ করে আলোচনায় বসতে চেয়েছে।
এ দিকে এই চার দেশ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য ১৩ দফা দাবি পেশ করেছে। এর মধ্যে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়ার দাবিও রয়েছে।
তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ওই চার দেশ নিষেধাজ্ঞা তোলার শর্ত কিছুটা শিথিল করেছে। তারা এখন সংকট নিরসনের জন্য আগের তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়।
লন্ডনের কিংস কলেজের সহকারী অধ্যাপক অ্যান্ড্রিয়াস ক্রিগ বলছেন, ‘সৌদি আরব ও কাতার যে প্রাথমিক চুক্তি করতে পারে, এটা খুবই ভালো খবর। তবে বিরোধ মিটতে আরও কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চুক্তির ঘোষণা হলে বোঝা যাবে, দুই দেশের নেতারা আত্মবিশ্বাস বাড়াবার জন্য কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন আর বিরোধ মেটাতেই বা তারা কতটা আগ্রহী।