‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ ভুলে সবাইকে ভ্যাকসিন নিতে বলছেন মঈন আলি
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মঈন আলি সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ভুলে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে। যাতে করে বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়া যায়। সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জন্য করোনা ভ্যাকসিনের দাম কম রাখায় যে ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে সাধারণের মাঝে, তা উড়িয়ে দিয়েছেন মঈন।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছেন কোভিড-১৯ ভাইরাসের জন্য ঠিক কোন মাত্রার ভ্যাকসিন সবচেয়ে কার্যকর হবে। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্তে হয়ে ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকার চেয়ে ভ্যাকসিন গ্রহণ করাই ভালো বলে মনে করেন মঈন। যখনই তিনি ভ্যাকসিন নেয়ার সুযোগ পাবেন, তা নিয়ে নেবেন বলে জানিয়েছেন ইংলিশ অলরাউন্ডার।
ভারতের চেন্নাইয়ে বসে জুম কনফারেন্সে মঈন বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমি হলে এটি (ভ্যাকসিন) নিয়ে নিতাম এবং সবাইকে নিতে বলতাম। যারা সম্পর্কে কিছুটা জানে, তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি অবশ্যই নিতাম এবং আমার পরিবার ও অন্যদেরও নিতে বলতাম।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা অন্যান্য যেকোনো ভ্যাকসিনের মতোই। এ বিষয়ে অনেক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব শোনা যাচ্ছে। অথচ এখানে চিকিৎসা বিদ্যার বাইরে আর কিছুই নেই। আমাদের সমাজে মানুষ যেকোনো কিছু নেয়ার সময়েই বাড়তি সতর্কতা দেখায়। তবে এখন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো সবকিছু স্বাভাবিক হওয়া।’
মঈন আলির এ মন্তব্য এসেছে মূলত গত মাসের একটি খবরের প্রেক্ষিতে। যেখানে ইংল্যান্ডের মুসলিম নেতারা করোনা ভ্যাকসিনের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন এবং এ ভ্যাকসিন নেয়ার আগে সবাইকে বারবার নিশ্চিত হওয়ার কথা বলেছেন জাতিগত কারণে।
চলতি সপ্তাহে ইংল্যান্ডের করোনা রোগীদের ওপর করা এক সমীক্ষায় পাওয়া গেছে, ৮০ বছরের বেশি বয়স্ক এবং কেয়ার হোমে না থাকা প্রায় ১০ লাখ মানুষের মধ্যে সাদা চামড়ার ৪৩ শতাংশ মানুষ করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। যেখানে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
আর যদি কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের কথা বলা হয়, তাহলে এ হার নেমে আসে মাত্র ২১ শতাংশে। অথচ অন্যান্য মানুষদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের চার গুণ এবং বাংলাদেশি-পাকিস্তানি ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষের করোনায় মৃত্যুর হার দ্বিগুণ বেশি।
মঈন আলি নিজেও একজন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত নাগরিক। যিনি ইংল্যান্ডের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং ১৩ দিন আইসোলেশনে ছিলেন। এছাড়া তার কাছাকাছি সংস্পর্শে আসা ক্রিস ওকসকেও এক সপ্তাহের আইসোলেশনে থাকতে হয়েছে।
শ্রীলঙ্কা সফরের প্রথম টেস্টের মাঝামাঝি সময়ে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন মঈন। পরে দ্বিতীয় টেস্ট চলাকালীন সময়ে শারীরিক পরিশ্রম শুরু করেন। সেই সফরের দুই টেস্ট খেলতে না পারার পর, এবার ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। প্রায় ১৮ মাস পর লাল বলের ক্রিকেটে ফিরবেন তিনি।