শ্রীলঙ্কায় চরম সংকটের মধ্যেই রাজাপাকসের নতুন মন্ত্রিসভা
চরম অথনৈতিক সংকটের মধ্যে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার সদস্যরা এর আগেই ইস্তফা দিয়েছেন। দাবি উঠছিল দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের।
পদত্যাগ না করে উল্টো চমক দেখালেন প্রেসিডেন্ট
নতুন ১৭ সদস্যকে আজ সোমবার মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দিয়েছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে।
এর আগে মন্ত্রিসভার ২৬ জন মন্ত্রী একযোগে পদত্যাগ করেছেন। চলমান বিক্ষোভের মুখে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন মন্ত্রিসভা নিয়োগ দিলেন রাজাপাকসে।
তার দলের বেশ কয়েকজন সদস্যকে বিভিন্ন পদে পুনরায় নিয়োগ দিয়েছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে। তিনি বিরোধীদলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, নতুন সরকারকে যেন সাহায্য করা হয়। যদিও সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন বিরোধীরা।
মন্ত্রিসভার সদস্যরা এ মাসের শুরুর দিকে পদত্যাগ করলেও গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদ আকড়ে থাকেন। হাজার হাজার মানুষ দেশব্যাপী বিক্ষোভ করলে জরুরি অবস্থা এবং কারফিউ জারি করা হয়।
তবে পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক সদস্য চামাল রাজাপাকসে এবং মাহিন্দার ছেলে নামাল রাজাপাকসেকে এবারের মন্ত্রিসভায় রাখেননি তিনি। ভাতিজা শশেন্দ্র আগে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, তবে এবারে তার নাম নেই।
১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর এবার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দ্বীপ রাষ্ট্রটি। বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে খাদ্য, জ্বালানি আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কা। যার ফলে দেশটিতে সৃষ্টি হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ঘাটতি এবং সবকিছুর দাম আকাশ ছুঁয়েছে।
তীব্র অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে ঋণ পুনর্গঠনের দিকে নজর দিতে চান রাজাপাকসে।
মার্চ মাস শেষে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে মাত্র ১.৯৩ বিলিয়ন ডলারে। চলতি বছর দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ ৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলে ধারণা করছেন জেপি মরগান বিশ্লেষকরা। এতে করে দেশটিকে তিন বিলিয়ন ডলারের তারল্য ঘাটতির মুখোমুখি হতে হবে।
প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশটিতে এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও তেলসহ নিত্যপণ্যের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন সাধারণ মানুষ। তারা ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করে চলেছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের ওপর।