শ্রীমঙ্গলে ৩৫ দেশের রাষ্ট্রদূতের মিলন মেলা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
আঁকা বাঁকা পথ। উঁচু নিচু পাহাড়। আর সেই পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজের সমারোহ। নতুন চায়ে ভরে গেছে বাগানগুলো। দেখলে মনে হয় যেন সবুজ পাটি বিছিয়ে রাখা হয়েছে। সেই চির সবুজের দেশ প্রকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিশ্বে চায়ের রাজধানী নামে পরিচিত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল সফরে এলেন বিশ্বের ৩৫টি দেশের রাষ্ট্রদূত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টার দিয়ে তাদের গাড়িবহর এসে পৌঁছে।
অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাতে আগে থেকেই শ্রীমঙ্গলের গ্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এন্ড গলফে এসে অপেক্ষায় ছিলেন প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা। প্রথমেই বাস থেকে নামেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এ কে আব্দুল মোমেন। এরপর এক এক করে নেমে আসেন রাষ্ট্রদূতরা। হেটেলের গ্রাউন্ডে তাদের বরণ করে নেয়া হয় ফুলের মালা, মনিপুরি নৃত্য আর পুলিশ বাহিনীর সুসজ্জিত ব্যন্ড দলের বাদ্ধের তালে তালে। ফুলে ফুলে ভরে উঠে পুরো হোটেল গ্রাউন্ড। শুরু হয় ফটো সেশন। আগত সব বিদেশীদের চোখেই আনন্দের ঝিলিক। হাসি মাখা মুখ নিয়ে এক দেশের সাথে আরেক দেশের রাষ্ট্রদূতদের কুশল বিনিময়। এ যেন এক মিলন মেলা। তাদের সঙ্গে ছিলেন উন্নয়ন সহোযোগী আরও ৬টি সংস্থার প্রধানরা।
দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখানোর জন্য বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এর মাধ্যে বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর সাথে আমাদের দেশের আরও সুসর্ম্পক তৈরী হবে।
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমাদের দেশের মিডিয়াগুলো মারামারি ছাড়া আর কিছুই দেখায় না। পত্রিকা খুললেই দেখাযায় মারামারির খবর। আমেরিকাতে প্রতিবছর হাজারখানের লোক পুলিশ মেরে ফেলে। তার একটা নাম বা ছবিও মিডিয়াতে দেখা যায়নি। সন্তান হারানো কোন মায়ের কান্নাও দেখা যায় না। কিছুদিন আগে ২২টি বাচ্চাকে মেরে ফেলা হলো। তাদের মায়েরাও তো কাঁদে। কিন্তু ওইসব তাদের মিডিয়াতে আসেনি। তাই আমাদের মিডিয়াকেও পরিবর্তন হতে হবে। মারামারি কাটাটারির পরও যে, আমাদের একটা দেশ আছে সেটা তুলে ধরতে হবে। আমাদের দেশের মিডিয়াগুলোকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। নেতিবাচক সংবাদ পরিহার করে ইতিবাচক সংবাদ করতে হবে। তিনি বলেন, শুধু তারেক জিয়া নয়, দণ্ডিত সকল আপরাধীদেরকেই দেশে আনা হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১১/১২ লক্ষ রোহিঙ্গাদের আমরা কীভাবে খাবাবো, পরাবো? এখন বিদেশী সাহায্যের পরিমাণও কমে আসছে। তাছাড়া সামনে বৃষ্টির দিন আসছে। তাই রোহিঙ্গারা যেন খুব তাড়াতাড়ি তাদের দেশে ফেরত যায় তার জন্য আমারা যত ধরনের তৎপরতা সব চালাচ্ছি। এছাড়া রোহিঙ্গারা যেন তাদের এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও না যায় তার জন্যও যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছি।
বিকেলে অতিথিরা চা বাগানে পরিদর্শন করেন। এরপর উপজেলার রামনগড় মনিপুরি পাড়া ঘুরতে যান। আগত রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে ছিলেন ভারত, ইতালি, লিবিয়া, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মরক্কো, নেপাল, আফগানিস্তান, ভুটান, ব্রাজিল, কুয়েত, কানাডা, ফ্রান্স, তুরস্ক, ইউএসএ, ওমান, জাপান, ফিলিপাইন, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, পাকিস্তান প্রমুখ।
এছাড়াও ছিল উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএনডিপি, বিমস্টেক, ইউএনএফপিএ, ইউসিকেইএফ বিডি, ইউএনএইচসিআর, ইউএসডিএসএস এর প্রধানরা।