শেয়ার কারসাজি: সস্ত্রীক বাদলের সম্পত্তি ক্রোক
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনার অন্যতম হোতা লুৎফর রহমান বাদল ও তার স্ত্রী সোমা আলমের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব বাজেয়াপ্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদালতের নির্দেশে গতকাল রবিবার তার এই সম্পতি ক্রোক করে সংস্থাটি। দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পেনাল কোডের ৩৮৬ ধারা অনুযায়ী, বাদলের ব্যাংক হিসাবে থাকা টাকা ব্যাংকের জিম্মায় এবং সব স্থাবর- অস্থাবর সম্পদ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে থাকবে।
দুদকের নথি অনুযায়ী, বাদলের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১৩০ কোটি ২৭ লাখ ২৩ হাজার ৩৯৬ টাকা। আর তার স্ত্রী সোমার সম্পদের পরিমাণ ১৩৭ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৭ টাকা।
দুদক সূত্রে জানা যায়, শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১৭ সালরে ২৮ মে দুদকের উপ-পরিচালক শেখ আবদুস সালাম বাদী হয়ে লুৎফর রহমান বাদল ও তার স্ত্রী সোমা আলমের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করনে।
অবধৈ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওই মামলা করা হয়। বাদল বেসরকারি খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক এবং নেপালের ‘নেপাল-বাংলা ব্যাংকে’র মূল উদ্যোক্তা।
সংস্থাটির একাধিক সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে আসামি বাদল দেশের বাইরে পালাতক। তবে দেশে থাকা সম্পদ বিদেশে স্থানান্তর ও অন্য নামে হস্তান্তরের চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।
দুদকের কর্মকর্তা বলেন, এসব সম্পদ অন্যের নামে হস্তান্তর করলে বিচারের রায় শেষে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণ ও জরিমানা আদায় একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়বে। তদন্তের স্বার্থে আসামি বাদলের নামে বিভিন্ন লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার মূলধন ও বিও একাউন্ট অবরুদ্ধ এবং বাড়ি-ফ্ল্যাট ও জমি ক্রোক করার প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য গতবছরের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার স্পেশাল জজ আদালতে আবেদন জানানো হয়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বাদলের সব সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন।
জব্দ করা সম্পত্তির মধ্যে আছে- লুৎফর রহমানের বনানীর পুরাতন ডিওএইচএসের ৫ নং রোডের ৬৮ নম্বর বাড়ি, বাড়িধারা মডেল টাউনের তিনতলা একটি বাড়ি, ধানমন্ডির রয়েল প্লাজা, বানানীর গলফ হাইটস, ভাটারার বাড়ি এবং কাকরাইল ও রমনার ভূমি জব্দ করা হয়েছে।
ফ্রিজ করা অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে- সাউথ ইস্ট ব্যাংকের একক ও যৌথ হিসাব, ওয়েসিস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ৫০ হাজার টাকার শেয়ার, সিনক্লিয়ার ফার্মাসিটিক্যালের ১ লাখ টাকার শেয়ার, লতিফ সিকিউরিটিজস লিমিটেডের ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার, বিসি করপোরেশনের ৫০ হাজার টাকার শেয়ার, ডায়াপার লিমিটেডের ৬০ লাখ টাকার শেয়ার, বেঙ্গল মিডিয়া করপোরেশনের ১ কোটি টাকার শেয়ার, আল মানার হাসপাতালের ৬৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার, ইউনিয়ন ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৪১ লাখ ৮১ এবং অন্যান্য সম্পদ।
দুদক জানায়, লুৎফর রহমান বাদলের দাখি করা সম্পদ বিবরণীতে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩ টাকার তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন ও ৫৯ কোটি ৭০ লাখ ৩৪ হাজার ২৯০ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহিভূর্ত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।