শেষ চিঠিতেও লড়াইয়ের কথা বলেছিলো নুসরাত
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দুর্বৃত্তদের আগুনে ঝলসে যাওয়া ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে শত চেষ্টাতেও বাঁচানো গেলো না! বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার হাতে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পরে কঠিন পরিস্থিতিতেও ভেঙ্গে না পড়ে বাঁচতে চেয়েছিলো ওই শিক্ষার্থী। সহপাঠী বান্ধবীদের উদ্দেশে হার না মেনে লড়াইয়ের কথা লিখেছিলো নুসরাত জাহান রাফি। তার লেখা শেষ চিঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাফির বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া চিঠিতে দিন-তারিখ লেখা না থাকলেও বিষয়বস্তু বিবেচনায় এটি কয়েকদিন আগের লেখা বলে মনে করছে তদন্তকারী সূত্র।
চিঠিতে নুসরাত জাহান রাফি তার সহপাঠীদের কাছে যৌন হয়রানির ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অধ্যক্ষের শাস্তি কামনা করে।
পুলিশ জানায়, তার পড়ার টেবিলের খাতায় দুই পাতার ওই চিঠি তামান্না ও সাথী নামে দুই বান্ধবীকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে। গত ২৭ মার্চ ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছে রাফি। ওই চিঠিতে রাফি আত্মহত্যা করবে না বলেও উলেখ করে।
তবে যৌন হয়রানির ঘটনার পর সিরাজ উদদৌলা গ্রেফতার হলে তার মুক্তির দাবির মিছিলে বান্ধবীদের অংশগ্রহণে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাফি। তাকে নিয়ে বান্ধবীদের বিভিন্ন কটূক্তিতেও মর্মাহত হওয়ার কথা চিঠিতে লিখেছিলো সে।
চিঠিটিতে রাফি লিখেছে, “তামান্না, সাথী। তোরা আমার বোনের মতো এবং বোনই। ঔ দিন তামান্না আমায় বলেছিল, আমি নাকি নাটক করতেছি। তোর সামনেই বললো। আরো কি কি বললো, আর তুই নাকি নিশাতকে বলেছিস আমরা খারাপ মেয়ে। বোন প্রেম করলে কি সে খারাপ ???”
“…আমি লড়বো শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমি প্রথমে যে ভুলটা করেছি আত্মহত্যা করতে গিয়ে। সেই ভুলটা দ্বিতীয়বার করবো না। মরে যাওয়া মানে তো হেরে যাওয়া। আমি মরবো না, আমি বাঁচবো। আমি তাকে শাস্তি দেবো। যে আমায় কষ্ট দিয়েছে। আমি তাকে এমন শাস্তি দেবো যে, তাকে দেখে অন্যরা শিক্ষা নিবে। আমি তাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেবো। ইনশাআলাহ।”