শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে গ্রেফতার
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে গ্রেফতার হয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের
তালিকাভুক্ত পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ, যার নামে ইন্টারপোলের
রেড নোটিসও ছিল।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) মহিউল
ইসলাম বলেন, দুবাইয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কয়েকদিন আগে
গ্রেফতার হন জিসান। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হয় বুধবার।
গ্রেফতার হওয়ার সময় তার হাতে ছিল ভারতীয় পাসপোর্ট। সেখানে তার নাম
লেখা ছিল আলী আকবর চৌধুরী। পরে এনসিবি ঢাকা আর এনসিবি দুবাই
মিলে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে আমরা নিশ্চিত হই,
গ্রেফতার এই আলী আকবর চৌধুরীই বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান।
মহিউল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
তৈরি করে দুবাইয়ে পাঠানো হবে। পরে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সেরে
তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০১ সালে যে ২৩ জন
‘শীর্ষ সন্ত্রাসীর’ তালিকা করেছিল, জিসান আহমেদ ওরফে মন্টি তাদেরই
একজন। এই পলাতক আসামিকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা
হয়েছিল।
গত শতকের শেষ এবং এ শতকের শুরুর দিকের বছরগুলোতে ঢাকার মতিঝিল,
মালিবাগ, বাড্ডা, গুলশান, বনানীর ব্যবসায়ীদের কাছে জিসান ছিলেন
আতঙ্কের নাম। তার চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির নানা গল্প সে সময় মানুষের
মুখে মুখে ঘুরত।
২০০৩ সালের ১৪ মে ঢাকার মালিবাগে একটি হোটেলে জিসানকে
গ্রেপ্তারের জন্য অভিযানে গিয়ে গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের দুই
কর্মকর্তা। ওই হত্যাকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। এরপর জিসান গা
ঢাকা দেন এবং ভারত হয়ে দুবাইয়ে চলে যান বলে ধারণা করা হয়। তাকে ধরতে
বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল।
সেই নোটিসে জিসানের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক বহনের অভিযোগ
থাকার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি তার ডোমিনিকান
রিপাবলিকের নাগরিকত্ব রয়েছে বলেও সেখানে উলেখ করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন দেশে না থাকালেও জিসান দুবাইয়ে বসেই ঢাকার অপরাধ জগতের
‘অনেক কিছু’ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন বলে বিভিন্ন সময়ে খবর এসেছে
গণমাধ্যমে। স¤প্রতি ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ
ভূঁইয়া এবং ঠিকাদার জিকে শামীম গ্রেফতার হওয়ার পর জিসানের নাম
নতুন করে আলোচনায় আসে।
গত মাসের শেষে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, শামীম ও খালেদকে
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে জিসানের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় বাংলাদেশের
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তখনই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে নতুন নামে
জিসানের দুবাইয়ে অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হন তারা।