December 21, 2024
জাতীয়

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সহযোগী শাকিল ঢাকায় গ্রেপ্তার

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদের সহযোগী মাজহারুল ইসলাম শাকিল ওরফে শাকিল মাজহারকে (৩৫) গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব। গতকাল শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শাকিলকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানিয়েছে, জিসানের নির্দেশে রাজধানীর অপরাধজগতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতেই একমাস আগে দুবাই থেকে ঢাকায় আসেন শাকিল।

বিকালে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তল্লাশি চৌকিতে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাকিলের কাছে গুলিভর্তি একটি পিস্তলও পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রথমে তার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে জিজ্ঞাসাবাদে এবং বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত যাচাই করে সে যে জিসানের সহযোগী, তা নিশ্চিত হওয়া যায়। সন্ত্রাসী জিসানের নির্দেশ ও সহযোগিতায় বাংলাদেশ সন্ত্রাসী কার্যক্রম নতুন করে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তার আসা, বলেন সারওয়ার বিন কাশেম।

শাকিল এ বছরের জানুয়ারিতে দুবাই থেকে দেশে আসেন জানিয়ে তিনি বলেন, দুবাই থেকে এসে সে একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়। হাসপাতালে থেকেই সে নানা ধরনের পরিকল্পনা করে আসছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, যুবলীগ নেতা রাজীব হত্যার এজাহারভুক্ত আসামি শাকিল ২০১৬ সালের জুনে চীনে চলে যান, এরপর ২০১৮ সালে চীন থেকে দুবাই যান। সেখানে জিসানের সঙ্গে তার পরিচয়। সেই সূত্রে দুজন দুবাইতে ব্যবসা করছিলেন।

গতবছর অক্টোবরে দুবাইতে জিসানের গ্রেপ্তারের বিষয়ে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে সে বিষয়ে শাকিল কোনো তথ্য দিতে পারেননি বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা সারওয়ার বিন কাশেম। তবে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ঢাকার অপরাধজগতের আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জিসান গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। কিন্তু পরে আর এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি। গত শতকের শেষ এবং এ শতকের শুরুর দিকের বছরগুলোতে ঢাকার মতিঝিল, মালিবাগ, বাড্ডা, গুলশান, বনানীর ব্যবসায়ীদের কাছে জিসান ছিলেন আতঙ্কের নাম। তার চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির নানা গল্প সে সময় মানুষের মুখে মুখে ঘুরত।

২০০৩ সালের ১৪ মে ঢাকার মালিবাগে একটি হোটেলে জিসানকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযানে গিয়ে গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের দুই কর্মকর্তা। ওই হত্যাকাÐে দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। এরপর জিসান গা ঢাকা দেন এবং ভারত হয়ে দুবাইয়ে চলে যান বলে ধারণা করা হয়। তাকে ধরতে বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল।

সেই নোটিসে জিসানের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক বহনের অভিযোগ থাকার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি তার ডোমিনিকান রিপাবলিকের নাগরিকত্ব রয়েছে বলেও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন দেশে না থাকালেও জিসান দুবাইয়ে বসেই ঢাকার অপরাধ জগতের ‘অনেক কিছু’ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন বলে বিভিন্ন সময়ে খবর এসেছে গণমাধ্যমে। স¤প্রতি ক্যাসিনোকাÐে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এবং ঠিকাদার জিকে শামীম গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিসানের নাম নতুন করে আলোচনায় আসে।

গত মাসের শেষে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, শামীম ও খালেদকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে জিসানের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তখনই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে নতুন নামে জিসানের দুবাইয়ে অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হন তারা।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *