December 22, 2024
ফিচারলাইফস্টাইল

শীতে ঠাণ্ডা লাগা ও গলাব্যথা

শীতের এই সময়টাতে শরীর সুস্থ্য রাখতে বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। যেহেতু এখানকার বাড়ি-ঘর, অফিস কিংবা মলের নির্দিষ্ট সহনীয় তাপমাত্রায় থাকে তাই ঘরের বাইরে গেলেই দরকার এই প্রস্তুতির। প্রস্তুতির বিষয়ে অনেকেরই হয়তো ধারণা আছে তাই সে বিষয়ে উল্লেখ করার আগে শীত কী ধরনের সমস্যা করতে পারে সে বিষয়ে একটু বলে নেওয়া ভালো। তীব্র এই শীতে ঠাণ্ডা, সর্দি, গলাব্যথা, হাড়ের জোড়া বা জয়েন্টে ব্যথা, পেটব্যথা, ডায়রিয়া, হার্টের সমস্যা—এমনকি বিষণ্নতা পর্যন্ত হতে পারে। শীতের অসুখের অধিকাংশই ভাইরাসজনিত। আর ভাইরাসজনিত সাধারণ সমস্যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওষুধের দরকার পড়ে না। ভাইরাস রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে একটা কথা হয়তো অনেকেই শুনে থাকবেন, সেটি হলো—ওষুধ খেলে ভাইরাস সারে এক সপ্তাহে, আর না খেলে সাত দিনে।

কমন কোল্ড বা ঠাণ্ডালাগা : কমন কোল্ডে আক্রান্ত হলে মূলত সর্দি, নাকবন্ধ, গলা খুসখুস করা, গলায় শ্লেষ্মা জমে থাকা, গা ব্যথা এবং জ্বর জ্বরভাব দেখা দেয়। নাক বন্ধের জন্য মাথাভারী লাগে, মাথাব্যথা করে।

কমন কোল্ড প্রতিরোধের জন্য মূল কার্যকর ব্যবস্থা হচ্ছে হাত ধুয়ে নেওয়া। যেহেতু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ সমস্যার পেছনে দায়ী হচ্ছে বিশেষ ধরনের ভাইরাস।

আমরা যখন প্রতিদিন বিভিন্ন কাজের সময় বিভিন্ন জিনিসপত্র এবং সাধারণের জন্য উন্মুক্ত জায়গা স্পর্শ করি, তখন কোনো না কোনোভাবে সেই জিনিসপত্র কিংবা স্থানগুলো ভাইরাস দিয়ে দূষিত হয়ে থাকলে, তা সহজেই আমাদের হাতে চলে আসে। এবার সেই হাত দিয়ে যদি নাক স্পর্শ করি তাহলে সহজেই তা নাক দিয়ে শ্বাসনালিতে চলে যাবে, খাবার খেলে পেটে চলে যাবে। পরিণামে আমাদের শরীরেও এই ভাইরাসের বিস্তৃতি ঘটবে। এক সময় ভাইরাস সংক্রমণের প্রকাশও ঘটবে বিভিন্ন উপসর্গের মাধ্যমে। সাধারণভাবে সবার জন্য ব্যবহার্য এলাকার মধ্যে রয়েছে বাস-ট্রেনের হ্যান্ডেল, অ্যালিভেটরের বোতাম, রেস্টরুম, কি-বোর্ড, টেলিফোন, দরজার হাতল বা নব ইত্যাদি। এ কারণে ঘরে ফিরেই হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নেওয়া জরুরি। আর যদি ধোয়ার ব্যবস্থা না থাকে সে ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। শুধু হাত ধোয়াই নয়, এর পাশাপাশি প্লেট, গ্লাস, কাপ, টাওয়াল এগুলোও পরিষ্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে ঘরে কেউ কমন কোল্ডে আক্রান্ত হয়ে থাকলে এসব জিনিসপত্র আক্রান্তের জন্য পৃথক করে দেওয়াই উত্তম। কমন কোল্ড থেকে উপশম পেতে শরীরটাকে গরম বা উষ্ণ রাখতে হবে। শীতের কাপড়-চোপড় ব্যবহারে আলসেমি করার সুযোগ নেই বা বীরত্ব দেখানোর কিছু নেই।

গলাব্যথা বা সোর থ্রোট : শীতের গলাব্যথা আরেকটি সচরাচর ঘটে থাকে এমন একটি সমস্যা। এই গলাব্যথাকে ইংরেজিতে বলা হয় সোর থ্রোট। সোর থ্রোট মানে ঠিক প্রচণ্ড গলাব্যথা নয়। সোর থ্রোট হচ্ছে গলার মধ্যে এমন এক অনুভূতি যখন গলার মধ্যে অল্প ব্যথা করবে, কিছুটা কাঁটার মতো বিঁধবে, একটু জ্বলবে, অস্বস্তি হবে সঙ্গে একটু জ্বলে যাওয়া ভাবও থাকবে। যাই হোক এটিকে মৃদু গলাব্যথাও বলা যেতে পারে। তবে মূল কথা হচ্ছে, এ ধরনের সমস্যা বিশেষ করে শীতের বেলায় হয়ে থাকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কারণ ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। গলাব্যথা যদি শুরুই হয়ে যায় এই শীতে, বসে থাকার উপায় নেই। কিছু একটা করতে হবে, তা না হলে সমস্যা বাড়তে পারে। তাই দ্রুত এবং সহজ উপায় হচ্ছে কুসুম গরম পানিতে লবণ দিয়ে গড়গড়া করা। এ বিষয়টি হয়তো অনেকেরই জানা আছে, তারপরও মনে করিয়ে দিতে চাই, এটি একটি বেশ কার্যকর উপশম পদ্ধতি। এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ পানিতে এক চা চামচ লবণ দিয়ে গড়গড়া করা যেতে পারে দৈনিক ২/৩বার।

(সংগৃহীত)

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *