শিশু সায়মা হত্যার রায় ৯ মার্চ
রাজধানীর ওয়ারীতে ছয় বছরের শিশু সামিয়া আফরিন সায়মাকে ধর্ষণের পর হত্যায় একমাত্র আসামি হারুন অর রশিদের কী সাজা হবে, তা জানা যাবে আগামী ৯ মার্চ।
ঢাকার এক নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান বৃহস্পতিবার রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতকের্র শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এই তারিখ রাখেন।
গত ২ জানুয়ারি আসামির বিচার শুরুর ৬৩ দিন পর মামলাটি রায়ের তারিখ এলো।
বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি মো. আব্দুল বারী এবং আসামিপক্ষে মো. আনোয়ারউল্লাহ প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে যুক্তিতর্কের শুনানি করেন।
২০১৯ সালের ৫ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে শিশু সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওয়ারীর বনগ্রামের খালি ফ্ল্যাটের নবম তলায় তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সময় তার গলায় রশি প্যাঁচানো, মুখ বাঁধা ও রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
ঘটনার পরদিন সায়মার বাবা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
সায়মা হত্যা মামলার একমাত্র আসামি হারুন অর রশিদকে গত ৭ জুলাই তার বাড়ি কুমিল্লার তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন হারুন।
মামলাটি তদন্ত শেষে গতবছর ৫ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, রঙের দোকানের কর্মচারী হারুন ধর্ষণের পর শিশুটির গলায় শক্ত পাটের রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
ওয়ারিতে যে ভবনে সায়মা তার বাবা-মার সঙ্গে থাকত, ওই ভবনের আরেকটি ফ্ল্যাটে অতিথি হয়ে এসেছিলেন হারুন। তার খালাত ভাই পারভেজের বাসায় প্রায় দুমাস ধরে থাকছিলেন হারুন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, গতবছরের ৫ জুলাই সন্ধ্যায় পারভেজের ছোট ছেলের সঙ্গে খেলতে ওই বাসায় এসেছিল সায়মা। তখন হারুন ছাদ দেখানোর কথা বলে তাকে ভবনের নবম তলার একটি খালি ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করেন।
চলতি বছর ২ জানুয়ারি আসামি হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে ৮ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। প্রথমদিন সাক্ষ্য দেন সায়মার বাবা।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ওয়ারী জোনাল টিমের পরিদর্শক মোহাম্মদ আরজুনের বক্তব্য গ্রহণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।
এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি একমাত্র আসামি হারুন অর রশিদ আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। ওইদিন বিচারক যুক্তিতর্কের শুনানির জন্য ৫ মার্চ দিন রেখেছিলেন।