শিগগিরই হয়ত শুনবেন মোয়াজ্জেম ধরা পড়েছে: কাদের
পরোয়ানা মাথায় নিয়ে লাপাত্তা ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে খুঁজে বের করতে ‘চেষ্টার কোনো ক্রটি হচ্ছে না’ বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদেরের এমন মন্তব্য আসে।
ফেনীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোয় অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলার আসামি সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন।
বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল পুলিশের এই পরিদর্শকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও তা তামিল নিয়ে ফেনী ও রংপুর পুলিশের মধ্যে চলছে ঠেলাঠেলি।
ফলে পুলিশ বাহিনী তাদের কর্মকর্তা মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তারে আদৌ আন্তরিক কি না- সেই প্রশ্ন তুলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
এই প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “যদি কেউ পলাতক হয়ে যায়, একটু সময় তো লাগবে তাকে খুঁজতে।”
সাংবাদিকরা সোমবার এ বিষয়ে সেতুমন্ত্রী কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনিও একই সুরে কথা বলেন।
ওসিকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় সরকারের ব্যর্থতা আছে কিনা- এই প্রশ্নে কাদের বলেন, “অ্যারেস্ট… দেখুন একটা লোক পলাতক হলে তাকে অ্যারেস্ট করা কষ্টকরই হয়। তবে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টার কোনো ক্রটি হচ্ছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়- দে আর ভেরি সিরিয়াস।”
মোয়াজ্জেমের গ্রেপ্তার না হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক কোনো প্রভাব কাজ করেছে কি না- সেই প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক।
উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমার তা মনে হয় না। এ বিষয়টা নিয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে এবং প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে খুব সিরিয়াস। সোনাগাজী আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট এ মামলায় কারাগারে আছে, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার গাফিলতি, কোনো প্রকার দুর্বলতা নেই।”
গত মার্চ মাসে নুসরাত জাহান রাফি তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করার পর তার তদন্তে তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম সোনাগাজী থানায় ডেকে নিয়ে ওই মাদ্রাসাছাত্রীর জবানবন্দি নিয়েছিলেন।
তার কয়েক দিনের মাথায় নুসরাতের গায়ে অগ্নিসংযোগ করা হলে তা নিয়ে সারাদেশে আলোচনার মধ্যে ওই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যুর পর গত ১৫ এপ্রিল ওই ভিডিও ছড়ানোর জন্য ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ওই ঘটনার তদন্ত করে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানালে গত ২৭ মে পুলিশ পরিদর্শক মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
নুসরাতের মৃত্যুর পর মোয়াজ্জেমকে সোনাগাজী থানা থেকে প্রত্যাহার করে রংপুর রেঞ্জে পাঠান হয়। কিন্তু সেখানেও তিনি এখন নেই।
ঈদের আগে মোয়াজ্জেম হোসেনের একটি আগাম জামিনের আবেদন হাই কোর্টে জমা পড়লেও সেই শুনানি এখনও হয়নি। ফলে আদালতেও তাকে দেখা যায়নি।