শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মিললো বিপন্ন প্রজাতির ‘সবুজ ফণিমনসা’
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
শ্রীমঙ্গলের উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিপন্ন প্রজাতির ‘সবুজ ফণিমনসা’ সাপ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন। সাপটি স্কুলের ফটকে ঝুলে থাকতে দেখে শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা আতংকিত হয়ে পড়েন। গতকাল বুধবার উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এই বিপন্ন প্রজাতির সাপটি উদ্ধার করা হয়।
শ্রীমঙ্গল উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবিতা রানী দাস বলেন, প্রতিদিনকার মতো আজও দুপুরে স্কুলে ক্লাস করাছিলাম। এমন সময় স্কুলের গেটের পাশের একটি গাছে সাপটি দেখে সবাই আতংকিত হয়ে পড়েন। গিয়ে দেখি কেউ কেউ বলাবলি করছেন- ‘এটা বিষাক্ত; এটাকে মেরে ফেলতে হবে।’ আমি তাদের নিষেধ করে বলি, এটা কখনোই করা যাবে না। পরে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনকে খবর দিলে তারা সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে পরিচালক সজল দেব বলেন, সাপটি উদয়ন স্কুলের ভেতরে ঢুকে পড়েছিল। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত সাপটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। কিছুদিন পরে এটিকে আমাদের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ছাড়া হবে।
সাপটির ছবি দেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং লেখক ড. কামরুল হাসান সাপটির পরিচিতি শনাক্ত করে বলেন, এর বাংলা নাম ‘সবুজ ফণিমনসা’ সাপ। তবে ‘গেছো সাপ’ নামেও তার পরিচিতি রয়েছে। এর ইংরেজি নাম এৎববহ ঈধঃ ঝহধশব এবং বৈজ্ঞানিক নাম ইড়রমধ পুধহবধ।
তিনি আরো বলেন, সাপটি ‘মাইল্ড ভেনোমাস’ অর্থাৎ বিষাক্তের তালিকায় পড়ে না। তবে কামড় দিয়ে কামড়ের স্থান কিছুটা ফুলে হালকা ব্যথা করতে পারে। এরা গাছেই থাকে। গেছো সাপ।
এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই সাপটি কি করে এলো এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘গ্রিন ক্যাট স্নেক’ মূলত বনে সাপ। বনের বাইরে একটাকে পাওয়াই যায় না। তাও আবার ভালো বন। বিদ্যালয়ের আশপাশে হয়তো ঝোপঝাড় আছে কিংবা কোনোভাবে হয়তো বনের সঙ্গে এই ঝোপঝাড়ের যোগ থাকতে পারে।
‘গ্রিন ক্যাট স্নেক’ কিন্তু নিশাচর সরীসৃপ। রাতে মূলত খাবারের সন্ধানে এক গাছ থেকে অন্যগাছ ঘুরে বেড়ায়। দিনে খুবই কম তাদের দেখা যায়। গেছো ইঁদুর, ব্যাঙ, ছোট পাখি, ছোট মেরুদণ্ডী প্রাণী এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং লেখক ড. কামরুল হাসান ।