শাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে সিলেট অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
‘বিবেকবান নাগরিক সমাজ’-এর ব্যানারে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে এ লংমার্চ শুরু হবে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে মঙ্গলবারের (২৫ জানুয়ারি) মধ্যে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়। উপাচার্য পদত্যাগ না করলে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে বিবেকবান নাগরিক সমাজ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানসহ কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষ থেকে এ বিবৃতি পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলছে। অনশনে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ অনশন ভাঙেননি। সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট কেউ শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসেননি। তাদের দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাসও দেখা যায়নি।
এতে আরও বলা হয়, টানা অনশনে ছাত্র-ছাত্রীরা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছেন। এভাবে চলতে পারে না। শিক্ষার্থীরা জীবন বিপন্ন করে অনশন কর্মসূচি করছেন। আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে বুধবার যাত্রা শুরু করা হবে।
এদিকে, লংমার্চ সফল করতে তারা ছাত্র-শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, খেলোয়াড়, শ্রমজীবীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ‘বিবেকবান নাগরিক সমাজ’।
গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিও সামনে আসে।
এরপর ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
১৯ জানুয়ারি বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন ২৩ জন শিক্ষার্থী। একই দাবিতে পরদিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল বের করেন।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আরও চার শিক্ষার্থী। এনিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।