শান্তি প্রস্তাবে সাড়া নেই কেন, জেলেনস্কিকে প্রশ্ন ক্রেমলিনের
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ ও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনার খসড়া ইতোমধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দপ্তরে পাঠিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন; কিন্তু এখনও এ বিষয়ে জেলেনস্কির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
গত সোমবার এই খসড়া পাঠানো হয়েছে; কিন্তু কী কারণে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কোনো প্রতিক্রিয়া জানালেন না— সেই প্রশ্নও তুলেছেন পেসকভ।
বৃহস্পতিবার মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘যেমনটা আমি গতকাল বলেছিলাম, আজ আবারও বলছি (ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি ঘোষণায়) আমাদের যেসব শর্ত রয়েছে, সেসব ইতোমধ্যে আঙ্কারার বৈঠকে অংশ নেওয়া ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
‘গত সোমবার এই খসড়া পাঠানো হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এ সম্পর্কে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। আমরা তার কারণ জানতে চাই।’
জেলেনস্কি অবশ্য বুধবার এক ভিডিওবার্তায় বলেছেন, রাশিয়া থেকে শান্তিচুক্তি সম্পর্কিত কোনো খসড়া এসেছে— এমন কোনো সংবাদ তিনি পাননি।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা এ বিষয়টি জানালে পেসকভ বলেন, ‘সেক্ষেত্রেও আমাদের প্রশ্ন আছে; আর সেটি হলো— কেন তিন দিন পেরিয়ে যাবার পরও কেউ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে আমাদের প্রস্তাবনা সম্পর্কে অবহিত করল না।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণার দু’দিন আগে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে (দনবাস রিপাবলিক) স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় মস্কো।
বৃহস্পতিবার এই যুদ্ধ গড়িয়েছে ৫৬ তম দিনে। এই সময়সীমার মধ্যে এর আগে ইউক্রেনে কয়েক দফা সামরিক ও অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
অভিযানের শুরুর দিকে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের সামরিক স্থাপনাসমূহে হামলা চালালেও গত দু’সপ্তাহ আগে নিজ সেনাদের ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সরিয়ে এনেছে রুশ কমান্ড। বর্তমানে পূর্বাঞ্চলে তীব্র সংঘাত চলছে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে।
এদিকে, যুদ্ধ শুরুর হওয়ার ৪ দিন পর, ২৮ ফেব্রুয়ারি বেলারুশের সীমান্তবর্তী শহর গোমেলে যুদ্ধ বিরতির জন্য বৈঠক শুরু করেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিরা; কিন্তু কয়েক দফা বৈঠকের পরও কোনো ফলাফল না আসায় মাসখানেক পর, মার্চের শেষ দিকে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় স্থানান্তর করা হয় এই বৈঠক।
গত ২৯ মার্চ থেকে তুরস্কে বৈঠক করছেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিরা।