শান্তিরক্ষা মিশনে র্যাবকে নিষিদ্ধের দাবিতে ১২ সংস্থার চিঠি
শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে জাতিসংঘে চিঠি পাঠিয়েছে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। গত বছরের ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যাঁ পিয়েরে ল্যাকরোইক্সের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিঠিতে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগের উচিত তাদের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাবকে নিষিদ্ধ করা। র্যাবের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বাহিনীটিকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সংস্থাগুলো।
চিঠিতে সই করা সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইন্স ইন-ভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স (আফাদ), এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা ফোরাম এশিয়া, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন, এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (আনফ্রেল), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, সিভিকাস: ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস, দ্য অ্যাডভোকেটস ফর হিউম্যান রাইটস, ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অ্যাগেইস্ট টরচার (ওএমসিটি)।
দুই মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগ এখনো এই চিঠির আনুষ্ঠানিক জবাব দেয়নি।
এদিকে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাবকে বাদ দিতে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, র্যাবের প্রতি অবিচার হচ্ছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো জাতিসংঘে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় বলে আসছি, যদি পেছনের দিকে তাকান- র্যাব কখন তৈরি হয়েছিল। যারা র্যাব তৈরি করেছিল, এখন তারাই আবার র্যাবকে অপছন্দ করছে, নানা ধরনের অপপ্রচার করছে।
তিনি বলেন, র্যাব যে ভালো কাজ করছে সেগুলো তারা তুলে ধরছেন না। র্যাব যে মাদকের বিরুদ্ধে, ভেজালদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছে, দস্যুমুক্ত করলো, চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে, তারা সবসময় জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনের জন্য কাজ করছে- সেই কথাগুলো তারা কখনো তুলে ধরেন না। তারা নানা ধরনের মানবাধিকারের কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা তো চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি যে, এমন কোনো দেশ নেই যেখানে এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটে না। পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ যদি অস্ত্র তুলে কথা বলে, পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা তখন নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকে না। তখনই এ সমস্ত ফায়ারিংয়ের ঘটনা ঘটে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবকিছুই যদি এলিট ফোর্স র্যাবের ঘাড়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমি মনে করি এটা তাদের প্রতি অবিচার হচ্ছে।
র্যাব কি পলিটিক্যাল বিরোধিতার মুখে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আপনারাই বিচার করবেন, আপনাদের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম।