শহীদ সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
দ. প্রতিবেদক
একুশে পদকপ্রাপ্ত শহীদ সাংবাদিক, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক জন্মভূমি সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবীর বালু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক মামলায় পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরো এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত পাঁচজন হলেন- পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির এমএল-জনযুদ্ধের শীর্ষনেতা সৈয়দ ইকবাল হোসেন স্বাধীন, নজুল ওরফে রিপন ওরফে নজরুল ইসলাম ওরফে খোড়া নজরুল, মাসুম ওরফে জাহাঙ্গীর (পলাতক), রিমন ওরফে আসাদুজ্জামান ও জাহিদ হোসেন ওরফে সবুজ ওরফে জাহিদুর রহমান।
এদের মধ্যে মাসুম ওরফে জাহাঙ্গীর পলাতক থাকায় অন্যরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে আদালত থেকে চারজনকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি স্পেশাল (পিপি) এ্যাড. আরিফ মাহমুদ লিটন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের ২৭ জুন নগরীর শান্তিধাম মোড়ে দৈনিক জন্মভূমি কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ২৮ জুন খুলনা থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মারুফ আহমদ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক ধারায় দুইটি মামলা দায়ের করেন।
২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুস সালাম শিকদার সাংবাদিক বালু হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিনি সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। খালাস পাওয়া আসামিরা হলো পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) জনযুদ্ধের প্রধান আব্দুল রশিদ মালিথা ওরফে দাদা তপন। ইকবাল হোসেন ওরফে স্বাধীন। জাহিদুর রহমান ওরফে সবুজ, রিমন, নজরুর ইসলাম ওরফে খোড়া নজু, নাজিম উদ্দিন, মাসুম। এছাড়া বিচারক পুলিশের দুর্বল প্রতিবেদন দাখিলের কথাও উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ আইনজীবী এনামুল হক বিস্ফোরক মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা দুটির মধ্যে ব্যাপক গড়মিল থাকায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলাটি অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন বলে তিনি আবেদনে উল্লেখ করেন। ২০ এপ্রিল বিচারক মোহাম্মদ সেকান্দার আলী মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। ১০ মে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে শুনানি শেষে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ৭ জুন মামলার নথি গ্রহণ করেন। অধিকতর তদন্তে আসা সাংবাদিক শহীদ হুমায়ুন কবির বালু হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক অংশের মামলাটি বেশ কয়েক বছর অতিবাহিত হয়। তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহাদত হোসেন সম্পুরক চার্জশিট দাখিল করেন।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ