শহরবাসীকে’ পিঠামুখ’ করিয়ে লাভের মুখ দেখছেন খুলনার পিঠা ব্যবসায়ীরা
নয়ন ইসলাম: প্রকৃতির চিরন্তন নিয়মে প্রতিবছর শীত আসে সাথে বয়ে আনে ঘন কুয়াশা এবং ভোরের সবুজ ঘাসে লেগে থাকা শিশির বিন্দু।
এই শীতকালীন মৌসুমে বাঙালির জীবনে নানা রকম গল্প দেখা যায়। কিন্তু সব গল্প উপেক্ষা করেই রকমারি শীতের পিঠা বাঙালির জীবনে বিশেষ অংশ হিসেবে প্রাধান্য পায়।
বাঙালির আদি খাদ্য সংস্কৃতির একটা অংশ শীতের পিঠা। বাংলার চিরায়ত লোকজ ও খাদ্যের সংস্কৃতিতে পিঠা-পায়েস একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
সাধারণত বছরের ডিসেম্বর মাসের ছুটিতে শহরমুখী মানুষ গ্রামে ছুটে যান তার আপন মানুষের হাতে রকমারি পিঠা খেতে।কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর বা সন্ধ্যায় গাঁয়ের আপন মানুষগুলি চুলোর পাশে বসে পিঠা তৈরিতে কাটান ব্যস্ত সময়।কিন্তু শহুরে ব্যস্ত জীবনে যারা এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারে না, তাদের একমাত্র ভরসা নগরীর রাস্তার পাশে এই ছোট পিঠাপুলির দোকান গুলি।
গ্রাম বাংলার মত হরেক রকমের পিঠা না থাকলেও কিছু সুপরিচিত পিঠা গুলো এই পিঠা পুলির দোকানগুলিতে পাওয়া যায়।প্রতিবছরই শীতকালে খুলনায় রাস্তার পাশে পিঠা তৈরির ব্যস্ততা চোখে পড়ে।
বিশেষ করে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা, রুপসা, খালিশপুর, বৈকালী বাজার, রেলওয়ে স্টেশন, নিরালা সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ছোট-বড় পিঠাপুলির দোকান দেখা যায়।
অস্থায়ী পিঠার দোকান গুলোর মালিক অন্যান্য মৌসুমে বিভিন্ন কাজে জীবন পরিচালনা করে থাকলেও শীতকালীন সময় তারা এই পিঠার ব্যবসায় ফেরত আসেন।
পিঠে ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের সাথে কথা বলে জানা যায়, শীতকালীন সময় পিঠা বিক্রি করে তিনি ভালোভাবে তার জীবিকা পরিচালনা করেন পাশাপাশি শহরে মানুষ গুলো কে পিঠা খাওয়াতে ও তার অনেক ভালো লাগে।তিনি আরো বলেন গতবছর মহামারী করোনার কারণে তারা ব্যবসা করতে পারেননি। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত তার ব্যবসা ভালো যাচ্ছে। বিগত ১৪ বছর যাবৎ নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় তিনি এই পিঠা বিক্রয় করে জীবিকা পরিচালনা করে আসছেন।
এছাড়াও তরুণ এক পিঠা ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানতে পারি, নিজের জমানো কিছু টাকা থেকে একটি সাইকেলের চাকা দিয়ে ভ্রাম্যমান পিঠার দোকানটি তিনি বানিয়েছেন ।তিনি আরো বলেন চাইলেই যেকোনো জায়গায় পিঠার দোকান দেওয়া যায় না। এক এক জন এক এক জায়গা দখল করে রাখে। তাই তিনি তার ভ্রাম্যমাণ গাড়িটা ঠেলে ঠেলে একসাথে বিভিন্ন জায়গায় পিঠা বানিয়ে তা বিক্রয় করেন।
সন্ধ্যার পর খুলনা নগরীতে বৈষম্যহীন ভাবে বিভিন্ন ধরনের মানুষের ভিড় আপনি দেখতে পাবেন এই পিঠা-পুলির দোকানগুলোতে।