শচিনের সঙ্গে হাত মেলানোর পর গোসল করতে চাননি যুবরাজ
ভারতের বর্তমান অধিনায়ক বিরাট কোহলির ক্যারিয়ার শুরুর দিকের একটি ঘটনা খুব জনপ্রিয়। তিনি যখন প্রথমবারের মতো ভারতীয় দলে আসেন, তখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন শচিন টেন্ডুলকারের সঙ্গে দেখা করার। এ সুযোগটা নেন দলের দুষ্টের শিরোমণি হিসেবে খ্যাত যুবরাজ সিং, হরভজন সিংরা।
কোহলিকে তারা বলেন, শচিনের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের সময় তার (শচিন) পায়ে ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিতে হয়। কেননা শচিন হলেন ক্রিকেট ঈশ্বর। মাত্রই দলে আসা কোহলি সেটি বিশ্বাস করেছিলেন, শচিনকে দেখামাত্রই গিয়েছিলেন পায়ে ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিতে। যা দেখে রীতিমতো হতভম্ব হয়ে পড়েছিলেন শচিন।
যুবরাজ-হরভজনরা কোহলির সঙ্গে শচিনকে ঘিরে এমন মজা করলেও, নিজেদের ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই শচিনের ব্যাপারে অনেক বেশি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন তারা। যার প্রমাণ মিলেছে অনেকবার। লর্ডসে যেমন এক প্রদর্শনী ম্যাচ চলাকালীন সময় বোলার শচিনের পায়ে ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিতে দেখা গেছে ব্যাটসম্যান যুবরাজকে।
শচিনের প্রতি এমন শ্রদ্ধা-সম্মান ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ছিল যুবরাজের। প্রথম যেদিন শচিনের সঙ্গে হাত মেলান, সেদিন আর গোসলই করতে চাননি যুবরাজ। কেননা এতে করে যদি শচিনের হাতের স্পর্শও ধুয়ে যায়! প্রায় দুই দশক আগের সেই স্মৃতি যুবরাজ নিজেই ভাগ করেছেন সবার সঙ্গে।
২০০০ সালে ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন যুবরাজ। সেই একই বছরের অক্টোবরে হওয়া আইসিসি নকআউট ট্রফির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পথচলা শুরু হয় তার। জাতীয় দলে প্রথমবার ঢোকার পর সব রথী-মহারথীদের দেখে রীতিমতো অন্য জগতে চলে গিয়েছিলেন যুবরাজ।
সেই সব স্মৃতির কথা তিনি জানিয়েছেন নেটফ্লিক্সে আপলোড করা এক ভিডিওতে। যেখানে যুবরাজ বলেন, ‘২০০০ সালে আমার অভিষেক হয়। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলার পর একটা স্রোতের মধ্যে চলে যাই। হুট করেই আবিষ্কার করি যে, আমি আমার হিরোদের সঙ্গে খেলছি। শচিন, গাঙ্গুলি, দ্রাবিড়, কুম্বলে, শ্রিনাথ- সব বড় বড় নাম। আমার তখন মনে হচ্ছিল, সত্যি এখানে আমি!’
‘ক্লাসরুমে আমি সবসময় পেছনের বেঞ্চের ছাত্র ছিলাম। বাসের মধ্যেও তাই। একসময় তিনি (শচিন) এলেন, জহির খান, বিজয় দাহিয়া ও আমার সঙ্গে হাত মেলালেন। আমরা তখন দলে নতুন। আমার মনে আছে, তিনি যখন পেছন ফিরে নিজের সিটে চলে গেলেন, আমি তখন আমার হাত সারা শরীরে ঘষতে শুরু করি। আমি গোসল করতে চাচ্ছিলাম না, কারণ শচিন টেন্ডুলকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছি।’
সেই ভিডিওতে যুবরাজ আরও জানান, ক্যারিয়ারে যখনই প্রয়োজন পড়েছে, নিঃসংকোচে শচিনের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পেরেছেন তিনি। বিশেষ করে মরনঘাতী ক্যান্সার জয় করে আবার ক্রিকেটে ফেরার মিশনে শচিনের কাছ থেকে অনেক সহায়তা পেয়েছেন তিনি। যে কারণে শচিনের প্রতি যুবরাজের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।