শঙ্কিত বিএনপির বক্তব্য উদভ্রান্তের প্রলাপ: তথ্যমন্ত্রী
ঈর্ষা ও শঙ্কা থেকে বিএনপি নেতারা যে বক্তব্যগুলো রাখছেন তা উদভ্রান্তের প্রলাপের মতো বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট নির্বাহী পরিষদের সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে বিএনপির ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ বলে আখ্যা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি গত ১১ বছরে কোনো বাজেটের প্রশংসা করতে পারেনি। প্রতিবারেই তারা বাজেটকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলেছেন। দেশের আরো কিছু প্রতিষ্ঠানও বিএনপির সাথে একই সুরে কথা বলেন। কিন্তু তাদের সব শঙ্কা, বিশেষজ্ঞতা ও বিরূপ মতামত ভুল প্রমাণ করে বাংলাদেশে গত ১১ বছর সব বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নের হার উন্নয়ন বাজেটসহ ৯৩ থেকে ৯৭ শতাংশ।’
এ বাজেটগুলো বাস্তবায়িত হওয়ার কারণে দেশে মানুষের মাথাপিছু আয় সাড়ে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, জিডিপির আকার বেড়েছে প্রায় তিনগুণ, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, দারিদ্র্য ৪১ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
বাজেট পাসের আগেই মোবাইল অপারেটররা অতিরিক্ত টাকা কেটে রাখছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত বাজেট পাস হওয়ার আগেই মোবাইলে যদি অতিরিক্ত টাকা কাটা শুরু হয়ে থাকে, এটি অন্যায়। মোবাইল কোম্পানিগুলো প্রস্তাবিত বাজেটের কথা ধরে ৩০ জুন বাজেট পাস হওয়ার আগে এটি করা সমীচীন নয়, অন্যায় এবং আইন বহির্ভূত।’
সাংবাদিকদের করোনাভাইরাসের সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে আখ্যা দিয় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে দেশে প্রায় তিনশত সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। বেশ কয়েকজন সাংবাদিক বন্ধু করোনাভাইরাসে ও আরো কয়েকজন এ রোগের উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এসব প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও দুঃখজনকভাবে অনেক মিডিয়া হাউজ সঠিক সময়ে বেতন ভাতা দেননি। অনেক হাউজে অনেক সাংবাদিক চাকুরিচ্যুতির শিকার হয়েছেন।’
এই পরিস্থিতিতে অসহায় অবস্থায় নিপতিত সাংবাদিকদের এককালীন ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সেই অনুদানের প্রথম পর্যায়ে যারা সহায়তা পাবেন তাদের তালিকাটি চূড়ান্ত করবো। এই তালিকাটি সাংবাদিক নেতৃবৃন্দই চূড়ান্ত করেছেন এবং ট্রাস্টের নীতিমালা অনুযায়ী সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং ডেপুটি কমিশনারদের মাধ্যমে যেগুলো এসেছে অর্থাৎ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বা অন্য কোন সংগঠনের মাধ্যমে পাওয়া তালিকাও যে তারা বিবেচনায় নেননি তা নয়। সেই তালিকা আজকের সভায় উপস্থাপনের পর সেটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করা হবে। প্রথম পর্যায়ে দলমত নির্বিশেষে দেড় হাজার সাংবাদিকের তালিকা আমরা চূড়ান্ত করবো। পরবর্তী পর্যায়ে আরো সাংবাদিক এ সহায়তা পাবেন। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে তারা চেক গ্রহণ করবেন।’
এ সময় তথ্যসচিব কামরুন নাহার, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর ওয়াজেদ, নির্বাহী কমিটি সদস্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, ঢাকা সংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।