লোভ দেখিয়ে তরুণী পাচারকারী চক্রের ৬ জন গ্রেপ্তার
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
চাকরির লোভ দেখিয়ে কিশোরী বা তরুণীদের দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর পাঠানোর সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব; তাদের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চার তরুণীকে। গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এবং ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাক জানিয়েছে।
তারা হলেন- তরুণী সংগ্রহকারী এজেন্ট অনিক হোসেন (৩১) ও আক্তার হোসেন (৪০), পাসপোর্ট প্রস্তুতকারী দালাল আফতাউল ইসলাম ওরফে পারভেজ (৩৭), দুবাইয়ে ড্যান্স ক্লাবের মালিক মনির হোসেন ওরফে সোহাগ (৩০) ও আব্দুল হান্নান (৫২), মোবিন ট্রাভেল এজেন্সির মালিক মো. আকাশ (২৯)।
তাদের কাছে ৭০টি পাসপোর্ট, ২০০টি পাসপোর্টের ফটোকপি, ৫০টি বিমান টিকেট, ৫০টি টুরিস্ট ভিসার ফটোকপি, নগদ ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।
র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, এই চক্রে বিভিন্ন পর্যায়ে শতাধিক সদস্য রয়েছে। তাদের প্রতিনিধি ওই সব দেশ থেকে বাংলাদেশে এসে কিশোরী বা তরুণীদের পছন্দ করে রেখে যায়। পরে এখানকার এজেন্টরা চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট দেশে পাঠিয়ে দেয়।
র্যাব-১১ এর কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দীন বলেন, এই চক্রটি ১৫ থেকে ২৫ বছরের। তারা নিম্নবিত্ত পরিবার, তৈরি পোশাক কারখানার কর্মী বা ব্রোকেন ফ্যামিলির সুন্দরী কিশোরী-তরুণীদের টার্গেট করে।
যাদের তারা টার্গেট করে তাদের উচ্চ বেতনসহ নানাভাবে প্রলোভন দেখানো হয়। পরে তাদের ছবি তুলে দুবাই বা মালয়েশিয়ায় নির্ধারিত প্রতিনিধির কাছে পাঠান হয়। পরে ছবি দেখে পছন্দ হওয়ার পর সেই প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসে।
এরপর সেই কিশোরী বা তরুণীকে নিয়ে প্রতিনিধি বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে বের হয়। পরে সংকেত দিয়ে চলে যায়। সংকেত পেয়ে বাংলাদেশের চক্রটি নিদিষ্ট কিশোরী- তরুণীকে দুবাই বা মালয়েশিয়া পাঠানোর কাজ শুরু করে।
ওই কিশোরী বা তরুণীদের ওই সব দেশে যৌন ব্যবসায় যুক্ত হতে বাধ্য করা হত বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা আলেপ। এই অভিযানের বিষয়ে দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র্যাব-১১ এর ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাব-১১ এর অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার রেজাউল হক।
তিনি বলেন, এই মানবপাচার চক্রের উপর দীর্ঘদিন ধরে র্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়ে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই ছয়জনকে আটক করা হয়। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারেও র্যাব সচেষ্ট বলে জানিয়েছে র্যাব।