লুটেরাদের প্রতি অ্যাপল: ‘তোমাদের আমরা ট্র্যাক করছি’!
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিসে পুলিশের নিপীড়নে প্রাণ হারিয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি জর্জ ফ্লয়েড। এর পরপরই ক্ষেপে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। জায়গায় জায়গায় চলছে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ। এই অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন দোকানে হচ্ছে ভাংচুর ও লুটপাট। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অ্যাপল স্টোরও।
এখন অ্যাপল বলছে, লুট হওয়া আইফোন ডিজএবল করে দিচ্ছে তারা এবং সেই সঙ্গে ওই ফোনগুলোর পর্দায় ভাসছে সতর্কবার্তা। — খবর ফোর্বস সাময়িকীর।
নিপীড়নের বিপরীতেই অবস্থান নিয়েছে অ্যাপল। কিন্তু তা-ই বলে সুযোগ সন্ধানীদের ছাড় দিতে রাজি নয় প্রতিষ্ঠানটি। কর্মীদের উদ্দেশ্যে পাঠানো বার্তায় অ্যাপল প্রধান টিম কুক অন্যায়ের বিরুদ্ধে একাত্ম হওয়ার আহবান জানিয়ে লিখেছেন, “আমাদের রাষ্ট্রের এবং লাখো মানুষের হৃদয়ে গভীর বেদনা রয়েছে। একত্রে দাঁড়াতে হবে, আমাদের অবশ্যই একে অন্যের জন্য দাঁড়াতে হবে এবং জর্জ ফ্লয়েডের অর্থহীন মৃত্যু ও দীর্ঘ এক বর্ণবৈষম্যের ইতিহাসের কারণে সৃষ্ট ভয়, ব্যথা এবং ক্ষোভকে বুঝতে হবে”।
কুক আরও লিখেছেন, “অ্যাপলে, আমাদের লক্ষ্য সবসময়ই এমন প্রযুক্তি তৈরি করা যা বিশ্বকে ভালোর দিকে বদলে দিতে মানুষের সহায়ক হবে। আমরা সবসময়ই বৈচিত্র্য থেকে শক্তি সঞ্চয় করেছি, বিশ্বব্যাপী আমাদের বিক্রয়কেন্দ্রে বিভিন্ন পথের মানুষকে স্বাগত জানিয়েছি, এবং এমন একটি অ্যাপল তৈরির জন্য কাজ করেছি যেটি সবাইকে কাছে টেনে নেয়।”
প্রতিবাদের মুখে নিজেদের বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধও রেখেছে মার্কিন টেক জায়ান্ট খ্যাত প্রতিষ্ঠানটি। কোভিড-১৯ এর পর খুলে দেওয়ার মাত্র কয়েকদিনের মাথায় আবারও দোকানে তালা ঝুলাতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। অ্যাপলের ওয়াশিংটন ডিসি, লস অ্যাঞ্জেলস, স্যান ফ্রান্সিসকো, নিউ ইয়র্ক এবং ফিলাডেলফিয়া বিক্রয়কেন্দ্র এরই মধ্যে হামলার কবলে পড়েছে, লুট হয়েছে বাক্সবন্দী আইফোন।
তবে, হাল ছাড়বার পাত্র নয় অ্যাপল। অনেক আগে থেকেই প্রতিষ্ঠানটির হাতে রয়েছে এমন প্রযুক্তি রয়েছে যা দিয়ে দূর থেকে ডিভাইস ডিজএবল করে দেওয়া যায়। এতোদিন এ প্রযুক্তির ব্যবহার প্রতিষ্ঠানিকভাবে খুব একটা দেখেনি বিশ্ব। এবার লুট হওয়া আইফোনের জন্য প্রযুক্তিটিকে মাঠে নামিয়েছে এই মার্কিন জায়ান্ট।
লুট হওয়া আইফোন দূর থেকে ডিজএবলড হয়ে যাচ্ছে, আর পর্দায় ভেসে উঠছে সতর্কবার্তা, “এই ডিভাইসটি ডিজএবল করে দেওয়া হয়েছে এবং ট্র্যাক করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হবে”।
এ ফোনগুলো ফিরে পাওয়ার আশা খুবই কম। হয়তো যন্ত্রাংশের জন্য খুলে ফেলা হবে ফোনটিকে, অনেকে হয়তো ভয়ে ফোন ফেলে দেবে। আর তাই বলা চলে, এ ধরনের সতর্কবার্তার মূল লক্ষ্য ফোন ফিরে পাওয়া নয়। অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানের পণ্য মন চাইলেই যে লুট করে নিয়ে খেয়াল খুশিমতো ব্যবহার করা সম্ভব নয়, তা প্রমাণ করা।