লুটপাট করতেই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি : রিজভী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
জনগণের ‘পকেট কাটতেই’ সরকার বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়িয়েছে মন্তব্য করে এর বিরুদ্ধে ‘গণপ্রতিরোধ’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি-অনুরোধ কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে সরকার যখন মন চাচ্ছে বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। আওয়ামী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্যেই তারা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বাণিজ্যের মন্দা এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দর পতনের মধ্যেই দেশে সব পর্যায়ে বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা মূল্য বাড়ানোর একমাত্র কারণ হলো লুটপাট। এই দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রাহকদের পকেট থেকে বছরে ২ হাজার কোটি টাকা লুটে নেবে আওয়ামী সিন্ডিকেট।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বৃহস্পতিবার বিদুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, যার ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে সাধারণ গ্রাহকের খরচ বাড়বে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ঢাকা ওয়াসা শুক্রবার এক গণবিজ্ঞপ্তিতে পানির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, যাতে আবাসিক সংযোগে খরচ বাড়ছে ২৫ শতাংশ।
এর ফলে জনগণের দুর্ভোগ বাড়বে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, বার বার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। শিল্প মালিকদেরও ‘ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি দশা।
শিল্প-বাণিজ্য খাতেও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে মন্তব্য করে এই বিএনপি নেতা বলেন, দেশীয় শিল্পকারখানা ধ্বংস করে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধের মাধ্যমে দেশকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা হারাচ্ছে শত শত প্রতিষ্ঠান।
রিজভী বলেন, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি দেশে শিল্পের শক্তি ধ্বংস করে দেবে; ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যক্তা ও ব্যবসায়ীদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। সেচে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, দ্রব্যমূল্যসহ মানুষের জীবনযাত্রার সকল খরচ বেড়ে যাবে, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ‘চরম আকার’ ধারণ করবে। আমরা এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, নিম্ন থেকে সর্বোচ্চ আদালত আজ অবরুদ্ধ মিডনাইট ভোট ডাকাতদের করতলে। দেশের জনগণ বিশ্বাস করে আদালতের ন্যূনতম স্বাধীনতা থাকলে বেগম খালেদা জিয়া জামিন পেতেন।
আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে সরকারের তত্ত¡াবধায়নে আদালতের অবিচারের শিকার হচ্ছেন, এমন পরিস্থিতিতে তার যদি আরো বড় কোনো ক্ষতি হয়ে যায়, তাহলে জনগণ কাউকে ক্ষমা করবে না।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক শাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুস সালাম, আজাদ, জয়ন্তু কুমার কুÐু, আবেদ রাজা, আহসানউল্লাহ হাসান উপস্থিত ছিলেন।