January 21, 2025
জাতীয়

লক্ষ্মীপুর ধর্ষণ-হত্যায় ৮ আসামির ফাঁসি বহাল

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

প্রায় আট বছর আগে ল²ীপুরে এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় আট আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে হাই কোর্ট, দুইজনের সাজা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ রায় দেয়।

মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন- কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হিরণ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার দহরপাড়া গ্রামের মানিক, তালিতপুর গ্রামের রাশেদ, রুদ্রপুর গ্রামের সুমন, সুধারামের ল²ীনারায়ণপুর গ্রামের হেদায়েত উল্যা হেদু, চাটখিল উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নুরনবী, সোনাইমুড়ি উপজেলার ধন্যপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন ওরফে রুবেল ও ল²ীপুর সদরের শ্রীরামপুর গ্রামের নুর আলম ওরফে নুরু। এই আট ফাঁসির আসামির মধ্যে মানিক, রাশেদ, সুমন ও রুবেল পলাতক, বাকিরা আছেন কারাগারে।

এ মামলার আসামিদের মধ্যে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও একলাশপুর গ্রামের সোহেলকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিলেও হাই কোর্ট তাদের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। এই দুজনের মধ্যে সোহেল পলাতক।

আসামিদের পক্ষে হাই কোর্টে শুনানি করেন আইনজজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন ও এস এম শফিকুল ইসলাম কাজল। পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আমিনুল ইসলাম, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সামসুন নাহার লাইজু ও ফারহানা আফরোজ রুনা।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৮ জুলাই মধ্যরাতে ল²ীপুর সদর থানার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের বসুদৌহিতা গ্রামে এ মামলার বাদীর বাড়িতে ডাকাতি করতে যায় আসামি নূর নবীসহ ২০-২৫ জন মুখোশধারী।

ডাকাতরা ঘরের সবাইকে জিম্মি করে স্বর্ণালংকারসহ পাঁচ লাখ টাকার মালামাল লুট করার পাশাপাশি বাদীর নাতনিকে একটি কক্ষে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করে। বাদীর নাতনি তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত।

ওই ঘটনার পরদিন ২০-২৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করে ওই পরিবার। ২০১৩ সালের ২৫ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মঞ্জুরুল বাছিদ ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর যে রায় দেন, তাতে ১০ জনকে মৃত্যুদÐ এবং বাকি ১৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়। পরে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ওই বছরই ডেথ রেফারেন্স হাই কোর্টে আসে। আসামিরাও জেল আপিল ও আপিল করেন। সেসবের ওপর শুনানি শেষে হাই কোর্ট মঙ্গলবার রায় দিল।

রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুল বলেন, যে দুজনের সাজা কমেছে তারা ওই ঘটনায় জড়িত হলেও সরাসরি ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত ছিলেন বলে প্রমাণিত হয়নি। অন্য আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি বা মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যেও ওই দুইজনের সম্পৃক্ততা আসেনি। এই যুক্তিতে উচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে তাদের যাবজ্জীবন দিয়েছে।

অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শ নিয়ে দুই আসামির যাবজ্জীবনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান আমিনুল। বিচারকি আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া ১৫ আসামির বিরুদ্ধে বাদী কিংবা রাষ্ট্রপক্ষ কেউই আপিল করেনি।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *