লকডাউন শিথিল করে দেশকে ভয়ংকর বিপদে ফেলেছে সরকার: ফখরুল
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের বিস্তারের মধ্যেও লকডাউন শিথিল করে সরকার দেশকে ভয়ংকর বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ ঘোষণা দিয়ে দোকান, রেস্তোরাঁ খুলে দিয়েছে। এটা সামাজিক দূরত্বের বিধির সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। লকডাউন শিথিলের ঘোষণার পর হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামছে।
“এভাবে চলতে থাকলে করোনা মোকাবিলা দূরে থাক, সারাদেশ ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে যথাযথ তদারকি না করে লকডাউন শিথিল করে দিয়ে সরকার ভয়ংকর বিপদজ্জনক অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।
“দাম্ভিকতা ছাড়া তাদের আর কিছুই নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে অদূরদর্শিতা, সমন্বয়হীনতা, উদাসীনতা ও একগুয়েমি মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। করোনায় মৃত্যুর দায় সরকারকে নিতে হবে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার মানুষকে ঘরে রাখতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার করেছে। কিন্তু মানুষকে ঘরে আটকে রাখতে সাধারণ ছুটির আইনগত ক্ষমতা নেই। সরকার এজন্য যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে নিজেদের অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে।”
করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষায় হাসপাতালে দীর্ঘ লাইনের কথা তুলে ধরে দেশের স্বাস্থ্যখাতের চরম অব্যবস্থাপনা ও সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে তিনি।
ত্রাণ নিয়ে সরকারি দলের নেতাকর্মী লুটপাটের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সরকার যতটুকু ত্রাণ দিয়েছে তা সব দলীয় নেতা-কর্মীদের তালিকা করে দিয়েছে, শুধু দলীয় লোকদের ত্রাণ দেওয়া হয়েছে, সাধারণ মানুষ বা অন্য দলের লোকদেরকে ত্রাণ দেওয়া হয়নি।”
গত ১৭ মে পর্যন্ত বিএনপি সারা দেশের ৩১ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৯৩টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে বলে জানান মির্জা ফখরুল।
এছাড়া ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন প্রায় ৭৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ হাজার পূর্ণাঙ্গ পিপিই সরবরাহের পাশাপাশ ড্যাব সদস্যরা অনলাইনে দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা দিচ্ছে বলেও তিনি জানান।
সিলেট কারাগারে একজন বন্দির করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও বিভিন্ন কারাগারে আক্রান্ত রোগীদের কথা উল্লেখ করে অবিলম্বে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।
কৃষকরা যাতে পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায়, বিশেষ করে আমের মৌসুমে আম-লিচু চাষীদের পণ্য বিক্রির যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
ত্রাণ চুরি ও ভুয়া তালিকা প্রনয়ন সম্পর্কে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ(টিআইবি)ও সিপিডির বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেন ফখরুল।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও করোনাভাইরাস জাতীয় পর্যবেক্ষণ সেলের আহবায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সমন্বয়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।