November 26, 2024
জাতীয়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: বিশ্বকে আরও তৎপর হতে বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাধ্য হয় সেজন্য আরও উদ্যোগী হতে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি আহŸান জানিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকায় নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে এই সংকটের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় এ আহŸান জানান তিনি।  রোহিঙ্গা সংকট যে দেশের কারণে সেই মিয়ানমার দূতাবাস কোনো প্রতিনিধি পাঠায়নি এই বৈঠকে।

গত ২২ আগস্ট রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর দ্বিতীয় প্রচেষ্টা ভেস্তে যাওয়ার পর বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বসলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর আলোচনার বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের জানান আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের দুর্দশার অবসানে বাংলাদেশ সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা করছে বলে কূটনীতিকদের জানিয়েছেন। আপনাদেরও (আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়) দায়িত্ব রয়েছে। আপনাদের প্রতি আমাদের আহŸান, আরও শক্ত অবস্থান নিন, আপনারা আরও পদক্ষেপ নেবেন। কারণ এটা শুধু আমাদের সমস্যা নয়, এটা সবার সমস্যা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার যাতে তাদের ফেরত নিতে বাধ্য হয় সেজন্য আপনাদের, বৈশ্বিক নেতৃত্ব ও বিশ্ব সংস্থাসমূহ, আপনাদের সবাইকে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রত্যাবাসনের দ্বিতীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন কী করবেন জানতে চাইলে মোমেন বলেন, নিজেদের পক্ষ থেকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন তারা। আলোচনার মাধ্যমে এই সংকটের অবসান করতে চাই আমরা। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্ব বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে এবং বিভিন্ন দেশ নানাভাবে মিয়ানমারকে সংকট সমাধানে উদ্যোগ নিতে রাজি করানোর চেষ্টা করছে। মিয়নামারের প্রধান মিত্র চীনও এই সংকট সমাধানে মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায় বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন বসছে কি না জানতে চাইলে মোমেন বলেন, চীনের নতুন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলবে এবং তারপর সিদ্ধান্ত নেবে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে আসতে থাকে রোহিঙ্গারা; এই সংখ্যা কিছু দিনের মধ্যে সাত লাখ ছাড়ায়। আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

তাদের কক্সবাজারের কয়েকটি কেন্দ্রে আশ্রয় দিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তায় জরুরি মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকার। রাখাইনের গ্রামে গ্রামে হত্যা-ধর্ষণ আর ব্যাপক জ্বালাও পোড়াওয়ের মধ্যে প্রাণ হাতে করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গারা ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তত চারটি শর্তের কথা বলছেন।

তাদের দাবি, প্রত্যাবাসনের জন্য আগে তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। জমি-জমা ও ভিটেমাটির দখল ফেরত দিতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রাখাইনে তাদের সঙ্গে যা হয়েছে, সেজন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *