রোহিঙ্গাদের নিয়ে ব্যবসার মনোভাব ছাড়ুন: এনজিওদের হানিফ
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলোতে মানবিক সহায়তার কাজে থাকা এনজিওগুলোকে ‘ব্যবসার মনোভাব’ ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগেরে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
শুক্রবার রাজধানীতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলে, “আপনারা আরও দায়িত্বশীল মনোভাব তৈরি করুন। এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে এনজিওদের শুধু ব্যবসার মনোভাব ত্যাগ করে তাদেরকে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করুণ, এটাই আমরা চাই।”
২০১৭ সালের অগাস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে সোয়া ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।
তাদের আশ্রয় দেওয়া হয় কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে; সেখানে আগে আসা আরও চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। দেশি-বিদেশি নানা এনজিওর সহযোগিতায় সেখানে এই শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
গত ২২ অগাস্ট শরণার্থী প্রত্যাবসনের দ্বিতীয় দফা উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অভিযোগ করা হয়, কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফিরতে নিরুৎসাহিত করছে।
কিছু এনজিও ‘মিয়ানমারের পক্ষ হয়ে’ রোহিঙ্গাদের নিয়ে ‘ষড়যন্ত্র করছে’ বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রোহিঙ্গাদের জন্য ‘ধারাল অস্ত্র’ তৈরির অভিযোগ ওঠায় মুক্তি কক্সবাজার নামে একটি এনজিওর ছয়টি প্রকল্প ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করেছে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো।
হানিফ বলেন, “আজকে রোহিঙ্গা সমস্যা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটা গোটা বিশ্ববাসীর সমস্য।… রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সারা বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি অনুরোধ জানাব যে সমস্ত উন্নত রাষ্ট্র আছেন, মহান শক্তিধর রাষ্ট্র আছেন, যারা আপনারা সব সময় মানবতার কথা বলেন, আপনাদের আরও সোচ্চার ভূমিকা দেখতে চাই।”
প্রত্যাবাসন চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপির সমালোচনার জবাবে পাল্টা তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনেন আওয়ামী লীগেরে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিএনপি রাজনীতি শুরু করেছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল মানবিক কারণে। এখানে ফাঁদে পড়ার কিছু নেই। এই অসহায় মানুষদের আশ্রয় দিয়ে মানবতা দেখিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।
“এই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান অচিরেই আপনারা দেখতে পাবেন। আপনাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, সরকারকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করুন, তাহলে আমাদের কাজ করেতে সুবিধা হবে। সরকার কোন ফান্দে পড়ে নাই।”
হানিফের ভাষায়, বিএনপিকে এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল বলা যায় না।
“এটা একটা রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। স্বাধীনতাবিরোধী, অশুভ শক্তি দুর্নীতিবাজ শক্তির একটা প্ল্যাটফর্ম বিএনপি। এই প্ল্যাটফর্মে থেকে তাদের লক্ষ্য একটাই, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্থ করা।”
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম মসজিদ অডিটরিয়ামে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যন মেজবাউর রহমান চৌধুরী আলোচনায় অংশ নেন।