December 21, 2024
জাতীয়

রেলে কোথায় দুর্নীতি হয়, তথ্য দিল দুদক

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

রেলওয়ের ওয়ার্কশপগুলো কার্যকর না করে ট্রেনের যন্ত্রাংশ আমদানির মাধ্যমে বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি হয় বলে উঠে এসেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক প্রতিবেদনে। দুদক বলছে, রেলের স্লিপার নির্মাণ কারখানা অকার্যকর রেখে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করা হচ্ছে।

দুদক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান গতকাল মঙ্গলবার রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনের কাছে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। রেল খাতে দুর্নীতির ১০টি উৎস চিহ্নিত করে তা বন্ধে ১৫টি সুপারিশ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, এটি বিশেষজ্ঞ মতামত সংবলিত কোনো প্রতিবেদন নয়। কমিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিম’ এর পর্যবেক্ষণ। বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

দুদকের সুপারিশ : রেলের বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগে বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের (আইবিএ, বুয়েট, বিএমসি) সহায়তা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে দুদকের প্রতিবেদনে। এছাড়া রেলের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক টিম মনে করছে।

রেলের সব ধরণের কেনাকাটা দরপত্রের মাধ্যমে করতে অভিজ্ঞ কারিগরী জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব দেওয়া, বেদখল হওয়া সম্পত্তি উদ্ধারে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন, দখলী জমি উদ্ধারে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর সুপারিশ করেছে দুদক।

এছাড়া রেলওয়ের ওয়ার্কশপ সচল করা, কোচ আমদানি নিরুৎসাহিত করে নিজস্ব কারখানায় কোচ নির্মাণ করার সক্ষমতা সৃষ্টি করা, একচেটিয়া ঠিকাদারী নিয়ন্ত্রণে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন (পিপিএ) অনুসরণ করা, বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন লাইন নির্মাণ ও সংস্কার কাজ তদারকি করা, অডিট কার্যক্রম জোরদার করা, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির মাধ্যমে রেলের পুরনো মালামাল বিক্রির ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এছাড়া রেলের সব কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় (অটোমেশন) পদ্ধতির আওতায় আনা, টিকেট কালোবাজারি রোধে ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার, রেল কর্মীদের পদোন্নতি ও বদলির ক্ষেত্রে সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠাকে মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা, যাত্রীসেবা বৃদ্ধি এবং নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করার সুপারিশ এসেছে প্রতিবেদনে। ট্রেনে সরবরাহ করা খাবারের মান নিশ্চিত করতে তদারকির ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি যৌক্তিক দামে খাবার বিক্রি করতে বলেছে দুদক।

দুদকের এই প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রেলমন্ত্রী নুরুল হক সুজন দুর্নীতি রোধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমরা কেবলই প্রতিবেদনটি হাতে পেয়েছি। প্রতিবেদনে দুদক যেসব সুপারিশ রয়েছে-সে আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *