রিভিউ কাণ্ডে কোনো শাস্তি হচ্ছে না কোহলিদের
গত কয়েক বছরে খেলোয়াড়দের নিয়ম শৃঙ্খলার ব্যাপারে কড়াকড়ি এনেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। এখন কেউ উইকেট নিয়ে অতিরিক্ত উদযাপন বা উদ্দামতা প্রদর্শন করলেও নানান অনুচ্ছেদের আইন দেখিয়ে জরিমানা বা ভর্ৎসনা করতে ভোলেন না ম্যাচ রেফারিরা।
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত কেপটাউন টেস্টে রিভিউয়ের সিদ্ধান্তে স্পষ্ট প্রতিবাদের পরও কোনো শাস্তি পেতে হবে না ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ম্যাচের দুই আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস ও আদ্রিয়ান হোল্ডস্টোক কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেননি।
ম্যাচ শেষে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট এ বিষয়ে ভারতের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদেরকে পরেরবার সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু ডিন এলগারের লেগ বিফোরের সিদ্ধান্ত বদলে যাওয়ার পর কোহলিরা যেসব কথা বলেছেন, তার বিপরীতে কোড অব কন্ডাক্ট ভঙ্গের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত প্রোটিয়াদের দ্বিতীয় ইনিংসের ২১তম ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ১ উইকেট হারিয়ে তুলে ফেলেছে ৬০ রান। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল গিয়ে আঘাত হানে এলগারের প্যাডে। ভারতের এলবিডব্লিউর আবেদনে ইতিবাচক সাড়াও দেন আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার রিভিউতে বল ট্র্যাকিংয়ের সময় দেখা যায় ডেলিভারিটা চলে যেতো স্টাম্পের ওপর দিয়ে। এই বল ট্র্যাকিং টেকনোলজি মূলত পরিচালনা করে হক আই নামের একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান, যারা সম্প্রচারকারীদের ডেটা দিয়ে থাকে। সুপারস্পোর্টও তাদের সাহায্য নিয়েই ম্যাচে আম্পায়ারদের সাহায্য করছে।
কিন্তু কোহলিদের মনে লেগে গেছে সন্দেহ। বিরক্ত কোহলিকে স্ট্যাম্প মাইক্রোফোনে বলতে শোনা গেছে, ‘নিজেদের দল যখন বল চকচকে বানায়, তখন তাদের ওপর মনোযোগ দাও, প্রতিপক্ষের ওপর নয়। সবসময় লোকজনকে ধরার চেষ্টা চলছেই।’
কোহলি একা নন অবশ্য, একটু পর ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে বলতে শোনা যায়, ’১১ জন মানুষের বিরুদ্ধে পুরো দেশ লেগে গেছে!’ অশ্বিন তো সরাসরিই আক্রমণ করেছেন ব্রডকাস্টারদের। তার পরিষ্কার কথা, ‘জেতার জন্য আরও ভালো একটা উপায় খুঁজে বের করা উচিত ছিল, সুপারস্পোর্ট!’
শুধু ভারতীয় খেলোয়াড়রাই নন। রিভিউয়ের রিপ্লে দেখে অবাক আম্পায়ার ইরাসমাসও। মাঠের বড় স্ক্রিনে বল স্ট্যাম্প মিস করার রিপ্লে দেখে মাথা নাড়িয়ে তিনি বলছিলেন, ‘এটা অসম্ভব!’
তবে স্বভাবতই এই রিভিউয়ের পক্ষে কথা বলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের খেলা শেষে লুঙ্গি এনগিদিকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, ডিআরএস প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দিতে পারছে কি? তার উত্তর ছিল, ‘হ্যাঁ’।
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রোটিয়া পেসার বলেন, ‘আমরা বিশ্বজুড়ে অনেকবারই এটার ব্যবহার দেখেছি। এটা এখন সময়ের দাবি। এজন্যই আমরা ক্রিকেটাররা এটা ব্যবহার করছি।’
অবশ্য ভারতীয়দের ক্ষোভ অসন্তোষ স্পষ্ট ছিল তৃতীয় দিনের পুরোটা সময়ই। দিনের শেষ বলে জাসপ্রিত বুমরাহর লেগ স্টাম্পের বাইরে করা বলটা খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ হয়েছেন বিতর্কিত রিভিউয়ে বেঁচে যাওয়া এলগার।
ওই সময়ও আম্পায়ার আদ্রিয়ান হোলস্টক আউট দেননি, রিভিউ নেয় ভারত। তখনই কোহলি স্টাম্প মাইকের কাছে এসে আবারও বলেন, ‘এবার কীভাবে এটা দেখাবে কে জানে!’