রিজেন্টের সাহেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
অর্থ আত্মসাতের দুই মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
সোমবার (১৩) জুলাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম এ পরোয়ানা জারি করেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশও দেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সাইফুল্লাহ মাসুদ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাহেদের বিরুদ্ধে এই দুটি মামলা করেন। দুই মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
প্রথম মামলার অভিযোগে বলা হয়, ব্যবসায়ী সাইফুল্লাহ মাসুদের কাছ থেকে ২০১৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সাহেদ দুই কোটি ৫৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৫ টাকার রড, সিমেন্ট, ইট ক্রয় করেন। তিনি কিছু টাকা পরিশোধ করলেও অনেক টাকা বাকি থাকে।
দ্বিতীয় মামলায় বলা হয়, একইভাবে পরে এক কোটি টাকার রড, ইট, সিমেন্ট নেন সাহেদ। এই এক কোটি টাকার জন্য সাহেদ চারটি ব্যাংক চেক দেন। কিন্তু চারটি চেক ব্যাংকে প্রত্যাখ্যাত হয়। তারপর সাইফুল্লাহ মাসুদ টাকা চাইলে তা না দিয়ে উল্টো ভয়ভীতি দেখান ও হত্যার হুমকি দেন তিনি।
এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি উত্তরা পশ্চিম থানায় জিডিও করেন সাইফুল্লাহ মাসুদ। এতেও কোনো কাজ হয়নি। তাই মাসুদ বাদী হয়ে সোমবার সিএমএম আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। বাদী মাসুদের জবানবন্দি গ্রহণের পর বিচারক সাহেদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত ৬ জুলাই রাতে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেছে র্যাব। মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
গত ৭ জুলাই বিকেলে উত্তরায় রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দেয় র্যাব। ওইদিন সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশের কথা বলা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রিজেন্ট হাসপাতালের ওই দুই শাখায় গত মার্চ থেকে কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সোমবার র্যাবের অভিযানে উত্তরা শাখায় (মূল শাখা) বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ে। এতে দেখা যায়, হাসপাতাল দুটি রোগীদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে বিরাট অঙ্কের টাকা আদায় করছে। পাশাপাশি অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও লাইসেন্স নবায়ন না করাসহ আরও অনিয়ম প্রমাণিত হয়।
এসব অনিয়মের কারণে এবং ‘মেডিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবটোরিস রেজুলেশন অরডিন্যান্স-১৯৮২’ অনুযায়ী এই হাসপাতালের কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলো।