রিকশা চালিয়ে কোটিপতি!
এক রিকশাচালকের বকেয়া আয়করের পরিমাণ দাঁড়িয়ে ৩ কোটি ৪৭ লাখ রুপি। সেই অর্থ জমা না দেওয়ায় তাকে একাধিকবার নোটিশ পাঠায় ভারতের আয়কর দপ্তর।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই রিকশাচালকের নাম প্রতাপ সিংহ। তিনি ভারতের উত্তরপ্রদেশের মাথুরার বাসিন্দা।
নোটিশ পাওয়ার পর প্রতাপ আয়কর দপ্তরে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন। রিকশাচালকের এত আয়কর ফাঁকি দেখে তারাও অবাক হন। পরে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে জালিয়াতির ঘটনাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতাপ সিং ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে চেয়েছিলেন। এজন্য প্রায় আড়াই বছর আগে তার বাড়ির কাছে একটি কেন্দ্রে গিয়ে প্যানের জন্য আবেদন করেছিলেন। তখন সেন্টার অপারেটর জানান, এক মাসের মধ্যে তার কার্ড আসবে। কিন্তু সেই কার্ড আসেনি।
রেকর্ড খতিয়ে দেখা যায়, কুরিয়ার কোম্পানি এই কার্ড দিয়েছে সঞ্জয় সিং নামের এক সাইবার ক্যাফে অপারেটরকে। কুরিয়ারের নিয়ম অনুসারে, এই প্যান কার্ডটি হোল্ডারকে নিজেই বা তার বৈধ ঠিকানায় পৌঁছে দিতে হবে।
এদিকে, রিকশাচালক প্রতাপ সিং প্যান কার্ডের জন্য বারবার সেখানে খোঁজ নেন। পরে প্রতাপকে প্যান কার্ডের রঙিন প্রিন্ট দেওয়া হয়। রিকশাওয়ালার জানা ছিল না যে, তার নামে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা চলছে।
যারা রিকশাচালকের আসল প্যান কার্ড হাতিয়ে নিয়েছিলেন, তারা সেই কার্ডটি জিএসটিতে নথিভুক্ত করেন। তবে প্রতারক জিএসটিতে নিজের নামই রেখেছিল। এক বছরে সেই জিএসটির অধীনে (২০১৮-১৯ অর্থবছর) প্রায় ৪৩ কোটি ৪৪ লাখ রুপি টার্নওভার হয়েছে।
আয়কর এবং জিএসটির মধ্যে সমঝোতা স্মারকের কারণে উভয় বিভাগ একে অপরের সঙ্গে তথ্য ভাগ করে। এই তথ্য পেয়ে আয়কর দপ্তর মামলাটি সন্দেহজনক বলে মনে হয়। কারণ এতে বিপুল পরিমাণ টার্নওভার থাকা সত্ত্বেও রিটার্ন দাখিল করা হচ্ছিল না।
অবশেষে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্যান কার্ডধারীকে নোটিশ পাঠানো হয়। অনেক নোটিশ পাঠানো হলেও রিকশাচালকের কাছে পৌঁছায়নি। এরপর চূড়ান্ত এক নোটিশ পাঠানো হলে সেটি হাতে পান রিকশাচালক। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখলে আসল তথ্যটি সামনে আসে।