রাসায়নিকের গুদাম সরানোর বিষয়ে কোন ছাড় নয় : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত থাকায় পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরানোর বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
সরকার এ বিষয়ে ‘খুবই সিরিয়াস’ জানিয়ে তিনি বলেন, নিমতলীর ঘটনার পরেই আমরা জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, পুরান ঢাকায় এ সমস্ত কেমিকেলের কারখানা যাতে না থাকে এবং দাহ্য পদার্থের গোডাউন যেন সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে আমরা দেখেছিলাম, কয়েক বছর তারা (ব্যবসায়ী) মেনেছিল। এখন দেখছি আবার তারা এ কর্মটি করেছে, যার খেসারত এটা (চুড়িহাট্টার আগুন) দিতে হল।
গত ২০ ফেব্র“য়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন প্রাণ হারান। ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় অন্তত পাঁচটি ভবন, যে ভবনগুলোর প্রায় প্রতিটিতে ছিল প্লাস্টিক দ্রব্য, রাসায়নিক কিংবা প্রসাধন সামগ্রীর গুদাম।
নয় বছর আগে নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর পুরান ঢাকার সব রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে ফেলার সুপারিশ করা হয়েছিল। এবারের অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য দাহ্য পদর্থের গুদামকে দায়ী করা হলে পুরনো দাবিটি আরও জোরেশোরে ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স করে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক ও প্লাস্টিকের গুদাম সরিয়ে নেওয়ার জন্য অভিযান চলছে।
তবে অভিযানে গিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়ছে টাস্কফোর্স। শনিবার বকশীবাজারের জয়নাগ সড়কে রাসায়নিকের গুদামে অভিযান চালানোর সময় ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মধ্যে টাস্কফোর্স দলের একটি গাড়িও ভাংচুর করা হয়। রবিবার শহীদনগরের রাজনারায়ণ সড়কে অবৈধ রাসায়নিক ও প্লাস্টিকের কারখানায় অভিযান চালাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছেন টাস্কফোর্স সদস্যরা।
এই পরিস্থিতির মধ্যে দুপুরে সচিবালয়ে ২৫ ও ২৬ মার্চের নিরাপত্তা বিষয়ে একটি সভা শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। তিনি বলেন, পুরান ঢাকায় রাসায়নিকসহ সব ধরনের দাহ্য পদার্থের গুদাম ও কারখানা যেন না থাকে সে বিষয়ে একটা নীতিমালা তৈরি করে সেটা যাতে সবাই মেনে চলে সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জনস্বার্থে এই অভিযান থেকে দমে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
এক্ষেত্রে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখানে মেয়র মহোদয় একটি সিদ্ধান্ত দেবেন যে কীভাবে তিনি তার নগরে কোথায় কোনটা রাখবেন, জাতীয়ভাবেও আমরা নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি (মেয়র) যে রকমভাবে সহযোগিতা চাইবেন বা চাচ্ছেন, আমরা সে কাজটি করছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মরণে ওই দিন রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারা দেশে বাতি নিভিয়ে এক মিনিট ‘ব্লাক আউট’ কর্মসূচি পালন করা হবে।
তবে কেপিআই ও চলাচলরত যানবাহন এই কর্মসূচির বাইরে থাকবে।
আর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন নির্বিঘ্নে করতে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকা থেকে সাভার স্মৃতি সৌধ পর্যন্ত রাস্তায় কোনো তোরণ তৈরি করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।