রাসায়নিকের গুদাম কদমতলী-টঙ্গীতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দুর্ঘটনায় প্রাণহানি এড়াতে পুরান ঢাকার রাসায়নিকের গুদাম আপাতত রাজধানীর কদমতলী ও টঙ্গীর দুটি জায়গায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ৬৯ জনের প্রাণহানির প্রেক্ষাপটে বুধবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কেমিকেল অ্যান্ড পারফিউমারি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন, বাংলাদেশ কেমিকেল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. সাহিদুর রহমান পরাগ ও বাংলাদেশ এসিড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ উলাহ পলাশ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে সচিব আব্দুল হালিম বলেন, টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের পাশে কাঠাল দিয়া মৌজায় বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের ৬ একর এবং কদমতলীর শ্যামপুর মৌজায় বিসিআইসির ৬ দশমিক ১৭ একর জমি রয়েছে। পুরান ঢাকার কেমিকেল সাময়িক সময়ের জন্য ওই দুই স্থানে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এর বাইরে সাভার এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুলায় ঢাকা ম্যাচ ফ্যাক্টরির কাছে এ ধরনের গুদাম সরানোর জন্য জমি রয়েছে বলে জানান সচিব। আবারও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যতটুকু জায়গা প্রয়োজন হয়, তা আমরা পেয়ে যাব।
টঙ্গী ও কদমতলীর ওই দুই জায়গায় চার লাখ বর্গফুট আয়তনের স্থাপনা তৈরি করা যাবে জানিয়ে সচিব বলেন, দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। শ্যামপুর মৌজার উজালার ম্যাচ ফ্যাক্টরীর কাছে দুটি গুদামও রয়েছে, সামান্য মেরামত করলেই সেখানে নিয়ে যেতে পারব। স্থানান্তর শুরু করব গ্র্যাজুয়ালি। আরও কিছু অবকাঠামো তৈরি করে ১৫ দিনেও সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সব রাসায়নিক স্থানান্তরের জন্য কত জায়গার প্রয়োজন, বৈঠকে তা জানতে চান সচিব।
তখন শুধু এসিড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপাতত পাঁচ হাজার বর্গফুট হলেই তাদের চলবে। তবে বাকি দুটি সংগঠনের নেতারা সময় নিয়ে হিসাব করে প্রয়োজনীয় স্থানের পরিমাণ জানাতে চান। ব্যবসায়ীদের বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তা জানাতে বলেন সচিব।
গত বুধবার রাতে চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় অন্তত পাঁচটি ভবন, যে ভবনগুলোর প্রায় প্রতিটিতে ছিল প্লাস্টিক দ্রব্য, রাসায়নিক কিংবা প্রসাধন সামগ্রীর গুদাম। নয় বছর আগে নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর পুরান ঢাকার সব রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে ফেলার সুপারিশ করা হয়েছিল। এবারের অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য দাহ্য পদর্থের গুদামকে দায়ী করা হলে পুরনো দাবিটি আরও জোরেশোরে উঠেছে।