‘রাষ্ট্রদূতরাও বলছেন নারায়ণগঞ্জে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে রাষ্ট্রদূতরাও মতামত দিয়েছেন।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় মন্ত্রীর দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নারায়নগঞ্জ সিটি নির্বাচনের ভোট গোটা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। মিডিয়া সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছে যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হওয়ার পরও বিপুল ভোটে বিজয় অর্জন করেছে (আওয়ামী লীগ)। অনেক জায়গায় দূরের গল্প আমরা শুনি। কিন্তু যে নির্বাচনটা হলো, সেটা পুরো জাতির ও আন্তর্জাতিক মহল প্রত্যক্ষ করেছে। কাল রাষ্ট্রদূতরাও এ কথাটি বলেছেন। আলোচনার অংশ হিসেবে এ বিষয়টা এসেছে যে, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার। ডিপ্লোম্যাটদের কাছে এই মেসেজটা গেছে যে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে ইভিএমে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশে অন্য ম্যানুয়াল প্রসেসে যে ভোটগুলো হয় সেগুলো নিয়ে কিছু কিছু বিতর্ক আছে। ইভিএমে যে নির্বাচন হয়েছে সেটি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হয়েছে, এটা তারা শেয়ার করেছেন।
ইভিএমে কারচুপির বিষয়ে পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, পরাজিত হলে প্রার্থীরা এমনটা বলেন। এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাই না। কোনো মেশিনে ত্রুটি থাকে না, কোনো মানুষ অসুস্থ হয় না এ কথাটা পৃথিবীতে কেউ বলতে পারবে না। আপনি অসুস্থ হবেন না, জীবনে অসুস্থ হননি আর কোনো মেশিন খারাপ হয়নি, সেটা কেউ বলতে পারবেন না। তবে কতটুকু খারাপ ছিল? হয়তো ভোট দিতে গিয়ে এটা দেখা গেলো আমি দেওয়ার পর আরেকজন দিতে গিয়ে কোনো রকম সেটিংস চেঞ্জ হয়ে গেছে। তাৎক্ষণিক সেটি আবার ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এটা আমি শুনেছি।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন ইভিএমে শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি নিয়ে সমালোচনার জায়গা আছে, প্রতিপক্ষ প্রার্থী বলেছেন এখানে মেশিন টেম্পারিং হয়েছে বা কারচুপি হয়েছে। এমন সমালোচনার অভাব নেই। ওখানে সমালোচনার সুযোগ বেশি। ম্যানুয়ালি হলে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারে। আর ইভিএমে হলে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারে না। এজন্য এখানে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। স্বাভাবিকভাবে ইভিএমে সারা পৃথিবী শিফট করছে, কারণ ফেক ভোট যাতে না পরে। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ অংশগ্রহণ করছে, প্রতিযোগীতামূলক নির্বাচন হচ্ছে। কোথাও কোথাও নিজেদের প্রার্থীকে জেতাতে গিয়ে বিবাদের ঘটনা ঘটে, এতে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে যা আমাদের কাম্য না। প্রতিবেশি দেশের দিকে তাকালে দেখা যাবে সেসব দেশে এসব হানাহানির আরও বেশি দৃষ্টান্ত আছে।
বিনা ভোটের নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিনা ভোটে না, এটা হলো আনকন্টেস্টেড। শব্দটা পরিবর্তন করা দরকার। এখানে বিনা ভোটে হয়নি। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। এটা হওয়ার ক্ষেত্রে ডেমেক্রেসিতে নতুন কিছু না। বাংলাদেশেই এ ঘটনা ঘটেছে, সেটা ঠিক না। আমার এলাকায়ও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছে।
সব জায়গায় ইভিএমে নির্বাচন প্রসঙ্গে তাজুল ইসলাম বলেন, যেকোনো নতুন পদ্ধতি কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হয়। এখন সেজন্য ইচ্ছা করলেই সরকার দেশে একসঙ্গে ইভিএম আরম্ভ করতে পারবে না। এটা অ্যাডাপটেশনের জন্য সময় লাগে। যিনি টেকনোলজি অপারেট করবেন এবং যিনি ইউজ করবেন, সেখানে ইউজারের সমস্যা থাকতে পারে। যারা অপরারেট করছেন তাদেরও টেকনিক্যাল যে সমস্ত চ্যালেঞ্জ আছে সেসব জেনে পারফেকশনে আসবে। এগুলো খুব বেশি আলোচনার বিষয় না। পৃথিবীর সব দেশেই এ সমস্যা আছে। আমেরিকার ইলেকশন, ভারতের ইলেকশনেও কিছু কিছু যান্ত্রিক গোলযোগ হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সারা বাংলাদেশে ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করা খুব বেশি তাড়াহুড়ো হয়ে যাবে। আস্তে আস্তে আমাদের অরিয়েন্টেড হতে হবে।