রাশিয়া হামলা চালালে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে: ইউক্রেন
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিলে ‘রক্তাক্ত গণহত্যা’ হবে। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, রাশিয়ানরাও কফিনে করে ফিরে যাবে।
মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার প্রত্যাশিত ভিডিও কনফারেন্সের আগে এসব কথা বলেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
সোমবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে মস্কোর বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান রেজনিকভ।
সিএনএনকে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে পরামর্শ দিয়ে আমি বলতে চাই—মি. পুতিনকে জানান যে, ক্রেমলিনের দিক থেকে কোনো লাল রেখা এখানে থাকা উচিত নয়। লাল রেখাটি এখানে ইউক্রেনে রয়েছে এবং সভ্য বিশ্ব বিনাদ্বিধায় প্রতিক্রিয়া জানাবে।
ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা জড়ো করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা। গত সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইউক্রেন সীমান্তে দ্রুত ও তাৎক্ষণিক আক্রমণ চালানোর সক্ষমতা রাশিয়ার রয়েছে এবং মস্কো আক্রমণ করতে পারে বলে আমেরিকান গোয়েন্দা সংশ্লিস্ট দুটি সূত্র গত সপ্তাহে সিএনএনকে বলেছে।
রেজনিকভ সিএনএনকে জানান, বর্তমানে ইউক্রেনে আক্রমণ করার মতো দূরত্বে রাশিয়ার ৯৫ হাজার সেনা রয়েছে।
রেজনিকভ আরও বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীর শক্তিমত্তা বিবেচনায় মার্কিন অনুমান, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার জন্য ১ লাখ ৭৫ হাজার সৈন্য মোতায়েন করতে পারে, এটা একটি অবমূল্যায়ন। আমাদের আড়াই লাখ সেনা রয়েছে; এছাড়াও চার লাখ ভেটেরান ও দুই লাখ সংরক্ষিত…। সুতরাং ইউক্রেনে আক্রমণ করার জন্য ১ লাখ ৭৫ হাজার সৈন্য যথেষ্ট নয়।
রেজনিকভ জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়ান আক্রমণ যদি ঘটে সমগ্র ইউরোপ মহাদেশের জন্য ‘বিপর্যয়কর’ পরিণতি হবে। আনুমানিক চার থেকে পাঁচ মিলিয়ন ইউক্রেনীয়কে সম্ভবত ইউরোপে আশ্রয় নিতে হবে। ইউক্রেন ইউরোপ ও আফ্রিকার অন্যতম প্রধান খাদ্য সরবরাহকারী দেশ, এতে সরবরাহ ব্যাহত হবে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী তার মিত্রদের কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জাম সহায়তার জন্য অনুরোধ পাঠিয়েছে বলে জানান দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এর মধ্যে বিমান ও নৌবাহিনীর জন্য সরঞ্জামাদি ও প্রশিক্ষণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের সৈন্য দরকার নেই। কারণ আমি মনে করি, ইউক্রেনে আমেরিকান সৈন্যরা মারা যাবে—এটা অতটা ন্যায়সঙ্গত নয়।
ইউক্রেন কয়েক সপ্তাহ ধরে সতর্ক করে আসছে যে, রাশিয়া কোনো পরিকল্পিত সামরিক আক্রমণের আগে দেশটিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ন্যাটো জানিয়েছে, সীমান্তের কাছে রাশিয়ার গতিবিধি অস্বাভাবিক ছিল।