রাশিয়ায় কয়লার খনি দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫২
রাশিয়ার সাইবেরিয়ায় একটি কয়লার খনিতে দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) কেমোরোভা অঞ্চলের লিজতিজনায়া খনির একটি বায়ুচলাচল খাদে আগুন ধরে গেলে খনিটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এসময় আটকা পড়েন শ্রমিকরা।
প্রাথমিকভাবে ১১ জনের মৃত্যুর খবর জানা যায়। কিন্তু রাতের মধ্যে আটকেপড়া শ্রমিকদের উদ্ধার কাজ ব্যাহত হওয়ায় বাড়তে থাকে নিহতের সংখ্যা। জরুরিসেবা বিভাগের এক সূত্র বলছে, আটকেপড়াদের মধ্যে ‘কেউ হয়তো আর বেঁচে নেই’।
দুর্ঘটনার সময় সেখানে ২৮৫ জনের মতো ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উদ্ধারের পর ৪৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ধোঁয়ার কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। চারজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
খনিতে বিপজ্জনক মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি এবং যে কোনো মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে এমন শঙ্কা থাকার কারণে সাময়িকভাবে উদ্ধার কাজ স্থগিত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে তিনজন উদ্ধারকর্মীরও মরদেহ পরে পাওয়া গেছে। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ আরও ৫০ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে ছয়জন উদ্ধারকর্মীও রয়েছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে, এ দুর্ঘটনার পর শ্রমিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে কয়লাখনির পরিচালককে আটক করা হয়েছে।
কয়লার খনিতে দুর্ঘটনা রাশিয়ায় প্রথম নয়। এর আগেও ২০০৪ সালে দেশটিতে খনিতে মিথেন গ্যাসের বিস্ফোরণে ১৩ জন নিহত হন। ২০১৬ সালে দেশটির কর্তৃপক্ষ ৫৮টি কয়লাখনিতে শ্রমিকদের সুরক্ষার বিষয়টি মূল্যায়ন করে এবং ঘোষণা দেয় যে এগুলো ৩৪ শতাংশ অনিরাপদ। সেই তালিকায় লিজতিজনায়া খনির নাম ছিল না।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন যে, তিনি আশা রাখেন যে যতটা সম্ভব মানুষকে বাঁচাতে সক্ষম হবেন। এতগুলো মানুষের প্রাণহানি ঘটনাকে, একটি বড় ট্র্যাজেডি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।