রাশিয়ার কয়লা কিনতে ডলার বাদ দিয়ে এশীয় মুদ্রা ব্যবহার করছে ভারত
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর রাশিয়া থেকে ছাড়ে (ডিসকাউন্ট) তেল ও কয়লা কেনা ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেয় ভারত। কিন্তু যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দেশটির ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশগুলো। পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন কৌশল বেছে নেয় ভারত। ডলার বাদ দিয়ে ব্যবহার করতে শুরু করে অন্যান্য এশীয় মুদ্রা। এতে মস্কোর ওপর দেওয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটাতে পারছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
ভারতের কাস্টমস নথি ও বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘রয়টার্স’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।এর আগে রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রাশিয়ার কয়লা কিনতে চীনের ইউয়ান ব্যবহার করছে ভারত। তবে এবার আরব আমিরাতের দিরহাম ও হংকংয়ের ডলার ব্যবহারের বিষয়টিও সামনে এসেছে।
এই কৌশলের কারণে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আঁচ অনেকটাই কম টের পাচ্ছে রাশিয়া। বিনিময়ে কাঁচামাল কেনার সময় ভারতকে অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি ছাড় (ডিসকাউন্ট) দিচ্ছে রাশিয়া।
জুনে ডলার ব্যতীত অন্য দেশের মুদ্রা ব্যবহার করে ৭ লাখ ৪২ হাজার টন রুশ কয়লা কিনেছে ভারত।
ওই মাসে নয়া দিল্লি সর্বমোট ১.৭ মিলিয়ন টন কয়লা আমদানি করে। এরমধ্যে প্রায় ৪৪ শতাংশই ডলারের বদলে অন্য মুদ্রা দিয়ে কিনেছে তারা।
ভারতের স্টিল উৎপাদনকারী ও সিমেন্ট উৎপাদনকারীরা আরব আমিরাতের দিরহাম, হংকংয়ের ডলার, চীনের ইউয়ান ও ইউরো ব্যবহার করে কয়লা কিনেছে।
জুনে ভারত ডলার ছাড়া যে পরিমাণ কয়লা এনেছে তার মধ্যে ৩১ ভাগের মূল্য পরিশোধ করেছে চীনের ইউয়ান দিয়ে, ২৮ ভাগ হংকংয়ের ডলার দিয়ে। তাছাড়া ইউরো ও আমিরাতের দিরহাম দিয়ে বাকিটা শোধ করেছে।
জুন মাসে রাশিয়ার কয়লা কিনতে যে পরিমাণ ডলার-বহির্ভূত মুদ্রা ব্যবহার করা হয়েছে, তার ৩১ শতাংশ ছিল ইউয়ান ও ২৮ শতাংশ ছিল হংকং ডলার। ইউরো ব্যবহার করা হয়েছে ২৫ শতাংশের কম এবং আমিরাতি দিরহাম ব্যবহার হয়েছে প্রায় ছয় ভাগের এক ভাগ।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) ভারতীয় রুপিতে পণ্যের মূল্য পরিশোধের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। এই পদক্ষেপে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের নিজস্ব মুদ্রায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির পাবে বলা আশা করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভারতীয় পণ্য আমদানিতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় মার্কিন ডলার। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সিংহভাগও ডলারেই রাখা হয়।
উল্লেখ্য, মার্কিন ডলার ব্যবহার করে রাশিয়ার কয়লা কেনা ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বেআইনি নয়। সূত্র: রয়টার্স